দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার হযরতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী মায়িশা মনাওয়ারা মিশুর একটি চিঠি এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল।
ইটভাটা বন্ধ করা নিয়ে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) উদ্দেশে পাঠানো ওই চিঠি এখন অনেকের ওয়ালে ছড়িয়ে পড়েছে। মিশুর এই চিঠি পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুধবার মিশুর বাসায় উপস্থিত হন। তিনি আশ্বাস দেন ইট ভাটাটি সরিয়ে নেওয়া হবে শিগগির।
এদিকে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ফোন দিয়ে মিশুর সাথে কথা বলেছেন বলে জানিয়েছেন মিশুর বাবা মোমিনুল ইসলাম।
মোমিনুল ইসলাম বলেন, 'মিশু দিনাজপুরের ডিসিকে উদ্দেশ্য করে চিঠিটি লিখেছে মিশু। আজ নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ফোন দিয়েছেন। তিনি মিশুর সঙ্গে কথা বলেছেন। মন্ত্রী বলেছেন, আমি এক্ষুনি ডিসি সাহেবকে বলে দিচ্ছি, তিনি ইট ভাটা সরানোর ব্যবস্থা করছেন।'
মোমিনুল ইসলাম আরও বলেন, আমি নিজেও একটি সরকারি স্কুলের শিক্ষক। স্কুলের পাশে এমন একটি ইটভাটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। মন্ত্রী মহোদয় ও ইউএনও মহোদয়ের এগিয়ে এসেছেন, এতে আমি খুশি।'
দ্বিতীয় শ্রেণির ওই ছাত্রীর চিঠিটি নিচে তুলে ধরা হলো :
মাননীয় ডিসি স্যার, দিনাজপুর
সালাম নেবেন।
আমরা দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার হযরতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ি। আমাদের স্কুলের পাশে বিপ্লব নামের একজন লোক ইটের ভাটা দিয়েছে। ভাটার কালো ধোয়ায় আমাদের শ্বাসকষ্ট হয়, পরিবেশের ক্ষতি হয়, চোখ জ্বালা করে। এখন আবার স্কুলের পাশে মুক্তা নামের এক লোক আরেকটা ভাটা দিচ্ছে। তাহলে আমাদের আরও কষ্ট হবে, আমরা কিভাবে বাঁচব। আপনি আমাদের বাঁচান।
ওই চিঠিটি আজ বুধবার দিনাজপুরের ডিসি মো. মাহমুদুল আলম পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন। ইটভাটা বন্ধ করতে এরই মধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ডিসি মো. মাহমুদুল আলম বলেন, ‘ফেসবুকের মাধ্যমে আজকে ওই চিঠিটি আমি পেয়েছি। চিঠিটি পাওয়ার পর আমি ওই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। তারা এরই মধ্যে ভাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে ঘটনাস্থলে গেছেন। তবে ওই দুটি ভাটা “যে অবস্থায় আছে, সে অবস্থায় থাকবে”-উচ্চ আদালতের এমন একটি নির্দেশনা রয়েছে। তাই সেই ভাটা ভেঙে ফেলা সম্ভব হচ্ছে না।’
ডিসি আরও বলেন, ‘ওই ভাটাগুলো এক বছর আগে থেকেই চালু আছে। কেন নতুন করে সেটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তা আমার জানা নেই।’