রাজধানীর বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর এবার ভবনটির ভেতরে ঢুকে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়। এরপর ভবনটির ভেতরে ঢুকে একের পর লাশ দেখতে পায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ২১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এফআর টাওয়ারের সামনেই ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে টানানো হয়েছে একটি বোর্ড। সেখানে আহত এবং নিহত ব্যক্তিদের হিসাব রাখা হচ্ছে।
সর্বশেষ ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আহত অবস্থায় নেওয়া হয় ৪ জনকে, এরমধ্যে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন ২ জনকে। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে আহত অবস্থায় নেওয়া হয় ৪২ জনকে, এরমধ্যে এক শ্রীলংকার নাগরিককে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এছাড়া ইউনাইটেড হাসপাতালে আহত অবস্থায় নেওয়া হয় ৫ জনকে, এরমধ্যে মৃত ঘোষণা করা হয় ৩ জনকে। ফায়ার সার্ভিসের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী মোট নিহতের সংখ্যা ১৯ জন। এছাড়া চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ৭০ জন।
সন্ধ্যায় প্রেস ব্রিফিংয়ে ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক (ডিডি) দিলীপ কুমার ঘোষ জানান, এ ঘটনায় ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনজন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে দুজন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে একজন এবং ঘটনাস্থলে ১৩ জন মারা গেছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন ৭০ জন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, অ্যাপোলো হাসপাতালে মারা গেছেন আমেনা এবং বনানী ক্লিনিকে মারা গেছেন পারভেজ সাজ্জাদ নামে আরও দুজন। এই হিসাবে মোট মৃতের সংখা দাঁড়ায় ২১ জনে।
এদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় তিনজনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। এর মধ্যে আব্দুল্লাহ আল ফারুক নামে এক ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, আব্দুল্লাহ আল ফারুকের শরীরের শতকরা ৯০ ভাগ পুড়ে গিয়েছিল। এছাড়া আবু হোসেন ও রেজাউল আহমেদ নামে দুইজনকে হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) আব্দুল আহাদ নিহত ছয়জনের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন। নিহতরা হলেন- পারভেজ সাজ্জাদ (৪৭), মামুন (৩৬), আমিনা ইয়াসমিন (৪০), আব্দুল্লাহ আল ফারুক (৩২), মনির (৫০) ও মাকসুদুর (৩৬)।
জানা গেছে, ঢামেকে নিহত ব্যক্তির নাম আব্দুল্লাহ আল ফারুক এবং কুর্মিটোলায় নিহতের নাম নিরস ভিগ্নে রাজা (৪০)। কুর্মিটোলায় নিহত রাজা শ্রীলঙ্কার নাগরিক এবং স্কেন ওয়েল লজিস্টিকসের ম্যানেজার পদে কর্মরত ছিলেন। তবে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিহত তিনজনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে যে ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা করেছেন চিকিৎসকরা, তার নাম নিরেশ ভিগ্নে রাজা। বয়স প্রায় ৩৫ বছর। তার বাড়ি শ্রীলংকায়। ভবনটির ১০ তলায় স্ক্যানয়েল লজিস্টিকস বাংলাদেশ নামে এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট অফিসে চাকরি করতেন তিনি। সূত্র জানিয়েছে, আগুন থেকে বাঁচতে লাফিয়ে পড়ে মারা গেছেন নিরেশ।