রাজধানীর বনানীতে এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আজ শনিবার বার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন আরো এক জন। এতে অগ্নিকাণ্ডে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৬ জনে দাঁড়াল। ভবনের ইলেকট্রনিক যন্ত্র কিংবা রান্নাঘরের ওভেন থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে আগুনের তীব্রতা বেড়েছে উদ্ধার কাজে অংশ নেয়া দুটি হেলিকপ্টারের বাতাসের কারণে!
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিষয়টি জানিয়েছেন। দুর্ঘটনার সময় তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন এবং একাধিকবার ভবনের ভেতরে যান।
ঘটনাস্থলে আসা একটি হেলিকপ্টার ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কাজে ব্যাঘাত ঘটায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ধরনের আগুনে হেলিকপ্টারের ব্যবহার উপকারের চেয়ে অপকার বেশি। কর্তৃপক্ষের চিন্তাভাবনা ছিল যেহেতু অনেকে ছাদে আছেন, তাদের জীবন বাঁচাতে হেলিকপ্টার ব্যবহার করা যেতে পারে। দু-তিনবার হেলিকপ্টার যখন একটু বেশি নিচে নামে তখন প্রচুর বাতাস হয়, আগুনের তীব্রতা তখন বেড়ে যায়। পরে যখন আমরা তাদের বলি যে, আগুন বাড়ছে তখন হেলিকপ্টার চলে যায়।
আগুন লাগার পরপরই দুটি উদ্ধারকারী হেলিকপ্টার ওপর থেকে পানি ও বালি ছেটায়। একপর্যায়ে তারা ভবন থেকে ৫০-৬০ ফিট উঁচুতে এসে দুজনকে উদ্ধার করে।
আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে ওই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ভবনের অষ্টম অথবা নবমতলা থেকে আগুনের সূত্রপাত। আগুনের ধর্ম হচ্ছে, লাগার পর তা ওপরের দিকে বাড়তে থাকে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে আমরা ধারণা করছি, বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে আগুনের সূত্রপাত। যে ফ্লোরে আগুন প্রথম লেগেছিল সেখানে অধিক সংখ্যক কম্পিউটার, সিপিইউ, আইপিএস, ইউপিএস, সার্ভার রুমসহ নানা ধরনের তারের জঞ্জাল ছিল। এর যেকোনো একটিতে আগুন লেগে ছড়িয়ে পাড়তে পারে।
তিনি জানান, যখন আগুন লাগে তখন ওই অফিসে দুপুরের খাবারের সময় চলছিল। এমনও হতে পারে, কেউ ফ্লোরের রান্নাঘরে ওভেনে খাবার গরম করতে দিয়েছিল। সেখান থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। আগুনের ফলে ভেতরের সবকিছু এমনভাবে পুড়ে গেছে যে, সূত্রপাতের জায়গাটি খুঁজতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে বৈদ্যুতিক গোলযোগেই ঘটেছে-এটা মোটামুটি নিশ্চিত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের নবনিযুক্ত মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ভবনের অষ্টম, নবম ও দশমতলার বিভিন্ন বোর্ড, প্লাস্টিক ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী বিশেষ করে কম্পিউটার থাকায় আগুন ভয়াবহ আকার ধারণ করে। ওই তিনটি ফ্লোরই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে আগুন ঠিক কোনো ফ্লোর থেকে লেগেছে তা এখনও নিশ্চিত নয়।
ওই ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির তদন্ত শেষে আগুনের কারণ ও সূত্রপাত সম্পর্কে জানা যাবে।