Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০২ শুক্রবার, মে ২০২৫ | ১৯ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

বনানী নিয়ে ব্রিফ করছেন মন্ত্রী, ঘুমাচ্ছেন রাজউক কর্মকর্তা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩১ মার্চ ২০১৯, ০৫:২২ PM
আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৯, ০৫:২২ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


রাজধানীর রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) অডিটোরিয়ামে সাম্প্রতিক সময়ের এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাসহ বগুতল ভবনগুলোর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে করণীয় ঠিক করতে রাজউক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। বৈঠকে গণপূর্তমন্ত্রী রেজাউল করিম ও রাজউক চেয়ারম্যান আব্দুর রহমানসহ মন্ত্রণালয় ও রাজউকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের সংবাদ সম্মেলনের সময় মন্ত্রীর ঠিক পেছনেই ঘুমাচ্ছিলেন রাজউকের এক কর্মকর্তা। এ ঘটনার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল।

জানা গেছে, মন্ত্রীর পেছনে ঘুমানো রাজউকের ওই কর্মকর্তার নাম আজহারুল ইসলাম খান। তিনি রাজউকের একজন সদস্য (এস্টেট ও ভূমি)।

এ বিষয়ে রাজউকের এক কর্মকর্তা বলেন, মন্ত্রীর ব্রিফিংয়ের সময় রাজউকের ওই কর্মকর্তা ঘুমিয়ে পড়েন। বিষয়টি টেলিভিশন ক্যামেরার লাইভে দেখা যায়। এ সময় ক্যামেরাম্যানরা অন্য কর্মকর্তাদের অনুরোধ করেন যেন কেউ গিয়ে ওই কর্মকর্তার ঘুম ভাঙান।

সংবাদ সম্মেলনে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, রাজধানীর কোন এলাকায় কোন বিল্ডিং পরিকল্পনা পরিপন্থী হয়েছে; নকশা, অনুমোদন, বিল্ডিং কোড মানা হয়নি- এমন হাইরাইজ বিল্ডিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে রাজউকের ২৪টি টিম মাঠে নামছে।

মন্ত্রী বলেন, ‘যেসব ভবন পরিকল্পনা নকশা অনুযায়ী করা হয়নি সেসব ভবনের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। নিয়মের বাইরে যেসব ভবন থাকবে সেগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘১৯৯৬ থেকে ২০০৮-এর পূর্ববর্তী সময়ে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা বা গ্যারেজ রাখার কোনো বিধান ছিল না। সেসব ভবনের জন্য নতুন করে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে।’

শ ম রেজাউল করিম বলেন, প্রতিটি বিল্ডিং যারা ব্যবহার করবেন তারা ভাড়াটিয়া হিসেবে বা সেখানকার মানুষ হিসেবে আগে দেখে নিতে হবে যে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা আছে কি না। অতিরিক্ত সিঁড়ি লাগানো আছে কিনা বা সব কিছু মেনে বিল্ডিং করা হয়েছে কিনা। যদি এসব নিয়ম মেনে না করা হয় তাহলে আপনি সেই ভবনটি ব্যবহার করবেন না।

গৃহায়নমন্ত্রী বলেন, আমাদের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট হওয়ার পর আমরা এটা জনসম্মুখে জাতীয় পত্রিকায়, টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করব। কারণ দেশের মানুষের জানা দরকার অর্থলোভী মানুষরূপী যারা এভাবে অবৈধভাবে ভবন নির্মাণ করে জানমালের নিরাপত্তা রক্ষা করেনি তাদের চেহারা দেশবাসীর দেখা উচিত।

গৃহায়নমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘রাজউকের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনায় সব রেকর্ড থাকতে হবে। যেসব রেকর্ড পাওয়া যাচ্ছে না, মিসিং আছে সেই সব ভবনের বিষয়ে আমরা আবার পরিদর্শন করে রেকর্ডটা নথিভুক্ত করব।’

তিনি জানান, ১ মে থেকে রাজউকের সব সেবা ডিজিটালাইজেশন হবে। এর মাধ্যমে জনগণের ভোগান্তি দূর হবে এবং রাজউক জনবান্ধব প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।

তিনি আরো জানান, ‘বিল্ডিংয়ে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে আগে আমরা শুধুমাত্র বিল্ডিং মালিক এবং ডেভেলপার কম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতাম। কিন্তু এখন আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেব।’

এদিকে একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রাজউকের কর্মকাণ্ড নিয়ে যখন চারদিকে সমালোচনা- এমন সময় গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে রাজউকের ওই কর্মকর্তার ঘুমানোর দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ হাস্যরসের জন্ম দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রাজধানীতে অগ্নিকাণ্ডের সংখ্যা বেড়ে গেছে। গত বৃহস্পতিবার বনানীর এফআর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মোট ২৫ জন নিহত হন। আহত হন ১২০ জন। তাদের মধ্যে ৫৬ জন রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

Bootstrap Image Preview