ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলে ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরকে অবরুদ্ধ করার অভিযোগ উঠেছে হল সংসদ ও ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে। হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মো. ফরিদ হাসানকে মারধরের ঘটনায় প্রতিবাদ জানাতে এসএম হলে প্রবেশ করলে এসব ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যা সাতটার দিকে প্রাধ্যক্ষের উপস্থিতিতে হল থেকে বের হন নুর।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) বিকাল পাঁচটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, এসএম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মো. ফরিদ হাসানকে সোমবার (১ এপ্রিল) রাতে মারধর করে হল থেকে বের করে দেয় ছাত্রলীগ। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে সোমবার (২ এপ্রিল) বিকাল ৪টায় টিএসসির রাজু সন্ত্রাসবিরোধী ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধন করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ডাকসু ভিপি নুর। মানববন্ধন শেষে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে সঙ্গে নিয়ে এই ঘটনার অভিযোগ জানাতে এসএম হলে প্রবেশ করেন তিনি। তখন নুরকে লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ করা হয়।
তবে নুর ও তার সঙ্গে থাকা শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, নুর এসএম হলে প্রবেশ করার পরপরই হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি তাহসান হোসেন রাসেল ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপসের নেতৃত্বে তাদের অবরুদ্ধ করা হয়। এসময় হল সংসদের অনুমতি না নিয়ে হলে প্রবেশ করায় নুরকে গালিগালাজ করেন হল সংসদের ভিপি কামাল হোসেন এবং জিএস জুলিয়াস সিজার। এক পর্যায়ে নুরকে ধাক্কা দেন কামাল। এছাড়াও ছাত্রলীগ কর্মীরা নুরের সঙ্গে থাকা একজনকে মারধর করেছে বলেও অভিযোগ তাদের।
তবে অভিযোগের ব্যাপারে এসএম হলের ভিপি কামাল বলেন, ‘এসব মিথ্যা অভিযোগ। মাদক ব্যবসায়ীকে বাঁচানোর জন্য তিনি (নুর) হলে এলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ডিম নিক্ষেপ করেছে।’
এর আগে হল সংসদের নেতারা নুরের কাছে হলে প্রবেশের কারণ জানতে চাইলে নুর বলেন, ‘অভিযোগ নিয়ে হল প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলতে এসেছি।’
বেলা সোয়া ছয়টার দিকে হল প্রাধ্যাক্ষ অধ্যাপক মাহবুবুল আলম জোয়ার্দার সেখানে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। আর পর সন্ধা ৭ টার দিকে নুর ও তার সঙ্গীদের নিয়ে হল থেকে বের হন তিনি।
প্রসঙ্গত, সোমবার রাতে হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মো. ফরিদ হাসানকে পিটিয়ে হল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে হল সংসদের ভিপি-জিএসসহ ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে। মারধরের ঘটনায় ফরিদের মাথা ফেটে যায়। আহত ফরিদ উর্দু বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। তিনি এসএম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও ১৫৯ নম্বর কক্ষে থাকেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারে তিনি চিকিৎসা নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ১১ মার্চ ডাকসু নির্বাচন সম্পন্ন হয়। এই নির্বাচন নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। নির্বাচনে এস এম হলসহ প্রায় সবগুলো এবং কেন্দ্রীয় সংসদের (ডাকসু) ২৫টি পদের ২৩টিতেই বিজয়ী হয় ছাত্রলীগ।