সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য সহ বিদ্যমান সমসাময়িক সমস্যা সমাধানের দাবিতে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে “গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ ছাত্র পরিষদ”।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে গণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে এ আন্দোলনের ডাক দেন সংগঠনটির আহ্বায়ক রনি আহমেদ।
এদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে উপাচার্য বিষয়ে যথাযথ সমাধানের আসার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) বিকাল ৩ টা ৩০ মিনিটে ধানমন্ডিস্থ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র নগর হাসপাতালে এক জরুরী সভায় বসে বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি বোর্ড। ট্রাস্টি বোর্ডের পক্ষ থেকে যে সমাধান দেওয়া হয়, তা যথাযথ মনে করেনি সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
“উপাচার্য বিষয়ে ট্রাস্টি বোর্ডের গৃহীত সিদ্ধান্ত সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে যায় না” এমন দাবিতে আগামীকাল শনিবার থেকে কঠোর আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির সাধারণ ছাত্র পরিষদ।
সাধারণ ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক রনি আহমেদ বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম, বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাষ্টি বোর্ড সাধারণ শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে গ্রহণযোগ্য সিদ্ধান্ত নিবে। কিন্তু দিন শেষে আমরা দেখলাম তাদের কাছে আমাদের ন্যায্য দাবি কোন মূল্য নেই। এখন আন্দোলনে যাওয়া ছাড়া কোন বিকল্প পথ নেই আমাদের। আন্দোলনের মধ্য দিয়েই আমাদের দাবি আদায় করব।”
সাধারণ ছাত্র পরিষদের নেতৃত্ববৃন্দ দাবি করেন, “শিক্ষাজীবন শেষ করে একটি বৈধ সনদপত্র প্রতিটি শিক্ষার্থীর ন্যায্য পাওনা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের বৈধ সনদপত্র প্রদানের নিশ্চয়তা দিতে পারছে না। আমরা আমাদের সনদপত্রের বৈধতা চাই, আমরা ক্যাম্পাসে ইউজিসি অনুমোদিত উপাচার্য চাই।”
আইন বিভাগের ৮ম সেমিস্ট্রারের জান্নাতুল ফেরদৌস জিবু বলেন, “অনেক অন্যায় সহ্য করেছি তবুও নীরব থেকেছি।এখন নীরব থাকার দিন ঘনিয়ে এসেছে। এবার অধিকার ছিনিয়ে নেয়ার পালা। এখনি সময় গর্জে ওঠার। না হলে এই সার্টিফিকেট নিয়ে সারা জীবন মাথা নিচু করে বাঁচতে হবে। তাই আর দেরি নয় আসুন আমরা সবাই নিজের অধিকার ছিনিয়ে নেই।”
উপাচার্য নিয়ে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের জন্য এর আগে কয়েকটি ধাপে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে আলোচনা করেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সকাল ১০ টায় তারা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শর্ত অনুযায়ী উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে।
উপাচার্য নিয়ে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে ট্রাস্টি বোর্ড কি সিদ্ধান্ত নিলো তা জানতে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে, তাঁদের পক্ষ থেকে কোন ধরনের সাড়া পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চ (বৃহস্পতিবার) সাধারণ শিক্ষার্থীদের এক মানববন্ধনে উপাচার্যের বিষয়ে কার্যকরী সিদ্ধান্তে আসার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৪ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) ট্রাস্টি বোর্ডের সভা পর্যন্ত সময় নেন বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার মোঃ দেলোয়ার হোসেন। সে পর্যন্ত তিনি শিক্ষার্থীদের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ক্লাসে ফেরার অনুরোধ করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রারের অনুরোধের প্রেক্ষিতে আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করে ক্লাসে ফিরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।