Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৩ শুক্রবার, জুন ২০২৫ | ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

আত্মহত্যার আগে অধ্যক্ষের পা ধরে ক্ষমা চেয়েছিল অরিত্রী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০ এপ্রিল ২০১৯, ০৫:৫৪ PM
আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৯, ০৫:৫৪ PM

bdmorning Image Preview


ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রী অধিকারী (১৪)আত্মহত্যার আগে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌসের পা ধরে ক্ষমা চেয়েছিল বলে মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক কামরুল হাসান তালুকদার এ তথ্য উল্লেখ করেছেন। ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিমের (সিএমএম) আদালতে গত ২৫ মার্চ তিনি এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

আজ বুধবার ধার্য তারিখে ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াছিল আহসান চৌধুরীর আদালতে ওই অভিযোগপত্র উপস্থান করা হয়। শুনানির সময় মামলার তিন আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন এবং তাদের জামিন স্থায়ী করারও আবেদন করেন।

শুনানি শেষে বিচারক অভিযোগপত্রের বিষয়ে বাদী অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারীর কোনো অভিযোগ আছে কি না, তা জানতে আগামী ৩০ এপ্রিল আদালতে হাজির হতে সমন দিয়েছেন। একইসঙ্গে ওইদিন পর্যন্ত আসামিদের জামিনের মেয়াদও বৃদ্ধি করেছেন।

মামলার তিন আসামি হলেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, শাখার প্রধান জিন্নাত আক্তার ও শ্রেণি শিক্ষিকা হাসনা হেনা। অভিযোগপত্রে প্রথম দুজনকে অভিযুক্ত করে এবং হাসনা হেনার অব্যাহতির আবেদন করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থীর সঙ্গে মোবাইল রাখা নিষিদ্ধ থাকলেও ২০১৮ সালের ২ ডিসেম্বর অরিত্রী মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ করেন, যা পরীক্ষা চলাকালীন হলের শিক্ষিকা আফসানা আমতু রাব্বী অরিত্রীর নিকট থেকে নিয়ে নেয় এবং পরদিন বাবা-মাকে স্কুলে আসতে বলে। সে অনুযায়ী অরিত্রী পরদিন বেলা ১১টার দিকে স্কুলে এসে মা-বাবাকে নিয়ে শ্রেণি শিক্ষিকা হাসনা হেনার সঙ্গে দেখা করে। সেখানে কিছু সময় বসে থাকার পর তিনি অরিত্রী ও তার মা-বাবাকে আসামি জিন্নাত আক্তারের কাছে নিয়ে যান। তবে জিনাত আক্তার তাদের দেখেই উত্তেজিত হয়ে ওঠেন এবং অরিত্রীর মা-বাবার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে মেয়েকে টিসি দিয়ে দেবেন বলে জানান।

তখন বাবা-মা অরিত্রীকে নিয়ে নাজনীন ফেরদৌসের রুমে যান। সেখানে নাজনীন ফেরদৌসের পা ধরে অরিত্রী ক্ষমা প্রার্থনা করে। সঙ্গে তার মা-বাবাও মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। কিন্তু নাজনীন ফেরদৌস তাদের কথাবার্তা ও ক্ষমা প্রার্থনায় কর্ণপাত না করে তিনিও টিসি দিয়ে দেবেন বলে জানান।

এতে অরিত্রীর মা-বাবার সঙ্গে নাজনীনের কথাকাটাকাটি হওয়ার সময় অরিত্রী বাসায় চলে যায় এবং আসামি নাজনীন ও জিন্নাত আক্তারদের নির্মম আচরণের কারণে সিলিং ফ্যানে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে আত্মহত্যা করে। আসামিদের নির্দয় ব্যবহার এবং অশিক্ষিত সুলভ আচরণই অরিত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করে।

অরিত্রী অধিকারী নাবালক (শিশু) হওয়ায় মামলার অভিযোগপত্রে দণ্ডবিধির ৩০৫ ধারায় দাখিল করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। ওই ধারায় কোনো শিশুকে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা ১০ বছর কারাদণ্ডসহ অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।

Bootstrap Image Preview