Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৩ শনিবার, মে ২০২৫ | ২০ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টাকারী মাদরাসার সেই অধ্যক্ষের মুক্তির দাবিতে মিছিল-মানববন্ধন!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০ এপ্রিল ২০১৯, ০৬:২৭ PM
আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৯, ০৬:২৭ PM

bdmorning Image Preview


ফেনীতে মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টাকারী সেই মাদ্রাসা অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন মাদ্রাসার কিছু প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী। এসময় সাবেক অনেক শিক্ষার্থী দাবি করে,আমাদের প্রাণপ্রিয় অধ্যক্ষকে ফাসানোর জন্য এই ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। আমরা তার নিঃশর্ত মুক্তি চাই।

এদিকে মাদ্রাসার কিছু বর্তমান শিক্ষার্থীদেরও এ মানববন্ধনে অংশ নিতে দেখা যায়। অগ্নিদগ্ধ তাদের সহপাঠীর বিচার দাবি না করে অধ্যক্ষের মুক্তি দাবি করছেন কেন এমন প্রশ্ন করলে তারা প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজী হননি।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন,বিভিন্যভাবে ভয় দেখিয়ে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের দিয়ে মানববন্ধন করানো হচ্ছে।

এদিকে রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টা মামলায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। অন্য দুই আসামির ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে।

দুপুরে ফেনী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এই আদেশ দেন। বেলা ১২টার দিকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, প্রভাষক আবছার উদ্দিন ও মাদরাসা ছাত্র আরিফুল ইসলামকে আদালতে হাজির করা হয়। প্রত্যেকের ৭ দিন করে রিমান্ড চায় পুলিশ।

অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা আগে থেকেই একটি মামলায় জেল হাজতে ছিলেন। অন্য দুজনকে ঘটনার পরপরই আটক করা হয়। এদিকে মঙ্গলবার রাতে যোবায়ের নামে এজাহারভুক্ত আরও এক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর কর্মকর্তারা।

এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মামলার অন্যতম আসামি সোনাগাজী পৌরসভার তুলাতলি এলাকার আবুল বশারের ছেলে জোবায়েরকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর রাতেই আটক করা হয় পপিকে। তিনি অগ্নিদগ্ধ নুসরাতের সহপাঠী। নুসরাতের মতো পপিও এবার সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা থেকে আলিম পরীক্ষা দিচ্ছিলেন।

এ নিয়ে মামলায় এজাহারভুক্ত তিনজনসহ দশজনকে গ্রেপ্তার করা হল। তাদের মধ্যে সাতজন কারাগারে এবং বাকিদের পুলিশি হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সোনাগাজী মডেল থানার পরিদর্শক কামাল হোসেন জানান, মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে জোবায়েরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রাতেই সোনাগাজীর চনচান্দিয়ার বাসা থেকে পপিকে আটক করা হয়।

তিনি বলেন, ‘নুসরাতের জবানবন্দিতে নাম আসা শম্পাকে খুঁজতে গিয়ে জড়িত সন্দেহে নুসরাতের সহপাঠী উম্মে সুলতানা পপিকে আটক করেছি আমরা। নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার সঙ্গে পপির সম্পৃক্ততা আছে কিনা এবং এ ঘটনায় জড়িতদের সন্ধান পেতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’

গত মার্চে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে ‘শ্লীলতাহানির’ অভিযোগ এনে সোনাগাজী থানায় একটি মামলা করে নুসরাতের পরিবার। মামলাটি তুলে না নেওয়ায় অধ্যক্ষ তার অনুসারীদের দিয়ে নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা চালান বলে অভিযোগ। শরীরের ৮০ শতাংশের বেশি পুড়ে যাওয়া নুসরাত ঢামেকের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন।

সেখানে পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে নুসরাত বলেছেন, গত শনিবার সকালে ওই মাদ্রাসা কেন্দ্রে আরবি প্রথম পত্রের পরীক্ষা দিতে গেলে তাকে ছাদে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বোরখা পরা চার নারী তাকে মামলা তুলে নিতে বলে। তাতে রাজি না হওয়ায় ওড়না দিয়ে তার হাত বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

জবানবন্দিতে তিনি বলেন, মুখ ঢাকা থাকায় ওই চারজনকে চিনতে পারেননি। তবে এক পর্যায়ে তাদের একজন আরেকজনকে শম্পা নামে ডেকেছে, সেটা তার মনে আছে।

নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় ভাইয়ের করা করা মামলায় ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজসহ আটজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বাকি আসামিরা হলেন- পৌর কাউন্সিলর মাকসুল আলম, প্রভাষক আবছার উদ্দিন, সাবেক ছাত্র শাহাদাত হোসেন শামীম, সাবেক ছাত্র নূর উদ্দিন, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের আহম্মদ ও হাফেজ আবদুল কাদের। এছাড়া ঘটনার সময় ‘হাতমোজা, চশমা ও বোরকা’ পরিহিত আরও চারজনকে আসামি করা হয়েছে এ মামলায়।

Bootstrap Image Preview