মাদ্রাসার শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফির হত্যাকরীদের বিচার না হলে আমরণ অনশনে বসার ঘোষণা দিয়েছেন কবি নির্মলেন্দু গুণ।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৩৭ মিনিটে নিজের ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এ কথা জানান তিনি।
ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘রাফির ধর্ষক সিরাজ ও সিরাজকে বাঁচাতে রাফিকে যারা পুড়িয়ে মেরেছে, তাদের কঠিন বিচার হবে। না হলে আমি আমৃত্যু অনশনে বসবো। ১১/০৪/১৯।’
এতে অনেকেই তার সাথে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে মন্তব্য করেছেন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তার স্ট্যাটাসটি শেয়ার করেছেন ২০০ জন। আর মন্তব্য করেছেন ২১৯ জন।
নুসরাতের জানাজায় মানুষের ঢল। সোনাগাজী, ফেনী, ১১ এপ্রিল। ছবি: এমদাদুল হকসবাইকে কাঁদিয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি। স্থানীয় ছাবের সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় নুসরাতের মরদেহ।
জানাজা পড়ান নুসরাতের বাবা এ এস এম মুসা মিয়া। জানাজার আগে স্থানীয়দের উদ্দেশে বাবা মুসা মিয়া বলেন, ‘বাড়ির আগুন সবাই দেখে। মনের আগুন কেউ দেখে না।’ কন্যা হত্যার বিচার চেয়ে বাবা বলেন, ‘আমাদের মতো কোনো বাবা-মার কোল যেন এভাবে খালি না হয়।’ তিনি নৃশংস এই ঘটনার বিচার দাবির পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী, হাসপাতালের চিকিৎসক ও গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
আজ বিকেল পাঁচটা আট মিনিটে নুসরাতের লাশ সোনাগাজীর উত্তর চর চান্দিয়া এলাকার বাড়িতে পৌঁছায়। সেখানে নুসরাতের মা শিরিন আক্তার ও ছোট ভাই রায়হান এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে হাজারো মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবনের ছাদে নুসরাতের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। সংকটজনক অবস্থায় ওই দিনই তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। বুধবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে নুসরাত মারা যান। তাঁর শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে যায় বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা।
এর আগে গত ২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন মেয়েটির মা। গত রবিবার নুসরাত চিকিৎসকদের কাছে দেওয়া শেষ জবানবন্দিতে বলেছিলেন, নেকাব, বোরকা ও হাতমোজা পরা চারজন তাঁর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন। ওই চারজনের একজনের নাম শম্পা।