ভারত পাকিস্তানের মধ্যে কোনো ধরনের উত্তেজনাকর কিছু ঘটলেই তার সরাসরি প্রভাব পড়ে দুই দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যেও। পরিস্থিতি এমনই দেখা যায় যে, ডাক এলে সবাই যেন এ মুহূর্তেই অস্ত্র হাতে নেমে পড়তে প্রস্তুত।
কিন্তু তাই বলে কি প্রতিবেশী দেশের সবকিছু সবাই বাদ দেয়? অপর দেশের ক্রিকেটের খোঁজ-খবর, চলচ্চিত্র, মজার খাবার, পোশাক-অলঙ্কার ইত্যাদির দিকে মন তো অনেকেরই পড়ে থাকে। নজর থাকে শত্রু দেশে থাকা মনের মানুষটার দিকেও।
তাইতো ঘর বাধার শত্রু দেশ গিয়ে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখেছিলেন ভারতের এক যুবক। কিন্তু মিয়া-বিবি রাজি থাকলেও সাম্প্রতিক যুদ্ধোম্মাদনায় একটি ব্যারিকেড পড়ে গিয়েছিল সেই বিয়েতে।
পাত্র মহেন্দ্র সিং-এর সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছিল পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের ছাগন কানওয়ারের। গত মার্চ মাসের আট তারিখে তাদের বিয়ে হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা হয়নি। কাশ্মিরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলাই এর জন্য দায়ী। যার কারণে শীতল হয়ে যায় ভারত-পাক সম্পর্ক। এবং পিছিয়ে যায় এই বিয়েও।
কারণ পাত্র মহেন্দ্রের বসবাস রাজস্থানের বারমেরে। সেখানকার খেজাদ কা পার নামক গ্রামের বাসিন্দা মহেন্দ্রর সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছিল পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশে সিনোই গ্রামের বাসিন্দা ছাগন কানওয়ারের।
জানা গেছে, দুই দেশের মধ্যে চলাচল করা থর এক্সপ্রেসে করে পাকিস্তানে যাওয়ার কথা ছিল বারমেরের সিং পরিবারের। থর এক্সপ্রেস ভারতের আত্তেরি এবং পাকিস্তানের লাহোর হয়ে যাতায়াত করে। ওই ট্রেনের টিকিট কাটাও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বিয়ের সপ্তাহ তিনেক আগে হয়ে যাওয়া ওই আত্মঘাতী হামলার কারণে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক শীতল হয়ে যায় ভারতের। যার কারণে মহেন্দ্র এবং তার পরিবারকে পাাকিস্তান প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইসলামাবাদ।
ফলে বিয়ে যায় পিছিয়ে। তবে পিছিয়ে গেলেও বিয়ে কিন্তু ভাঙেনি। পরিস্থিতি ঠান্ডা হলে আবারো বিয়ের নেয়ার পরিকল্পনা করে দুই পরিবার। এ অবস্থায় ঠিক হয় আগামী ১৬ এপ্রিল হতে যাচ্ছে স্থগিত হয়ে যাওয়া বিয়েটি। এবার সতর্কতাস্বরূপ বিয়ের দিন চারেক আগে শুক্রবার পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে রওনা হন মহেন্দ্র। সেই থর এক্সপ্রেসে করেই বধূর বাড়ি যান তিনি।
ট্রেনে ওঠার আগে তিনি বলেন, আমাদের বিয়ে গত মাসের আট তারিখে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পুলওয়ামা কা-ের ফলে দুই দেশের সম্পর্ক খারাপ হয়ে যাওয়ায় বিয়ে পিছিয়ে গিয়েছিল। এখন অবস্থা ভাল হয়েছে। ফলে আমি বিয়ে করতে যাচ্ছি। আমি ভীষণ খুশি।