ভারতের মধ্যপ্রদেশের ভোপাল থেকে প্রায় ৩৪০ কিলোমিটার দূরে দেবীগড় গ্রামে কাঠফাটা রোদ্দুর খোলা মাঠের মধ্যে দিয়ে খালি পায়ে হেঁটে চলেছেন এক যুবতী। বয়স কুড়ির ঘরে। পা টলছে। শরীর কাঁপছে। দেখে মনে হচ্ছে এই বুঝি মাটিতে লুটিয়ে পড়বেন। কারণ কাঁধে করে তিনি যে ওজন বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তা তার নিজের চেয়েও ভারী। না, কোনও বস্তু নয়। যুবতী কাঁধে বহন করছেন তার স্বামীকে! আর এই দৃশ্যই তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করছেন গ্রামের মাতব্বরেরা।
এভাবে এক যুবতীকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। প্রখর রোদে মাঠের উপর দিয়ে স্বামীকে কাঁধে তুলে বয়ে নিয়ে যাওয়ার শাস্তি। তিনি সামান্য ক্লান্ত হয়ে পড়লেই আশপাশ থেকে ভেসে আসছে হুমকি। কী এমন অপরাধ করেছেন যুবতী? ভিন জাতের ছেলের সঙ্গে বিয়ে করেছেন। হ্যাঁ, এমন 'অপরাধে'র জন্যই শাস্তির নিদান দিয়েছেন গ্রামের মাতব্বররা। আর যুবতী যখন শাস্তি পালন করছেন, তখন তাকে ঘিরে রীতিমতো মশকরা চলছে। জনা দশ-বারো যুবক ও মধ্যবয়সি লোক যুবতীর পাশে পাশে হেঁটে চলেছেন। কেউ নাচছেন। কেউ আবার এমন 'মজা'র দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করছেন।
এমন অমানবিক দৃশ্য সামনে আসতেই নিন্দার ঝড় উঠেছে। প্রাপ্ত বয়স্ক যুবক-যুবতী স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছেন। তারপরও কোন নিয়মে এমন শাস্তি ভোগ করতে হবে তাঁদের? কোন পথে এগোচ্ছে সমাজ? উঠছে প্রশ্ন। ইতিমধ্যেই ঘটনার খবর দেওয়া হয়েছে থানায়। ঝাবুয়া থানার এসপি বিনীত জৈন বলেন, মহিলাকে অপমান করার কারণে প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এখনও পর্যন্ত দু'জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।