Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ রবিবার, জুন ২০২৫ | ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

নুসরাত হত্যা: দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে কাদের

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৯ এপ্রিল ২০১৯, ১১:৪০ AM
আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৯, ১১:৪০ AM

bdmorning Image Preview


ফেনীর সোনাগাজীতে মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের পর আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় এজাহারভুক্ত আসামি ও মূল পরিকল্পনাকারীদের একজন হাফেজ আব্দুল কাদের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাতে আদালতে তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। এ নিয়ে চারজন ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিলেন।

আদালত সূত্র জানায়, গতকাল বিকেল ৩টার দিকে ফেনী পিবিআইয়ের কর্মকর্তারা কাদেরকে আদালতে নিয়ে যান। এ সময় ঘণ্টাব্যাপী আদালতে কয়েকজন পুলিশ সদস্যের সঙ্গে খোশগল্প করে সময় কাটান তিনি। তাঁকে ফুরফুরে মেজাজে দেখা যায়। বিকেল ৪টার দিকে তাঁকে বিচারকের খাস কামরায় নিয়ে যান পুলিশ কর্মকর্তারা।

আদালত সূত্র জানায়, বিচারকের খাস কামরায় প্রবেশের পর প্রায় এক ঘণ্টা পর্যন্ত কাদের জবানবন্দি দিতে রাজি হননি। পরে তিনি জবানবন্দি দিতে রাজি হন।

মাদরাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক ও ফাজিল দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র কাদেরকে বুধবার রাজধানীর মিরপুরের ৬০ ফুট সড়কসংলগ্ন ছাপরা মসজিদ এলাকায় তাঁর এক আত্মীয়ের বাসা থেকে গ্রেফতার করে পিবিআই।

পিবিআই সূত্র জানায়, ঘটনার আগের রাতে মাদরাসার একটি কক্ষে নুসরাত হত্যার পরিকল্পনা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কাদের। ঘটনার দিন তাঁর দায়িত্ব পড়ে গেটে পাহারা দেওয়ার। ওই দিন নুসরাতের ভাই নোমান বোনকে পরীক্ষার হলে এগিয়ে দিতে গেলে কাদের তাঁকে বাধা দেন এবং ভেতরে প্রবেশ করতে দেননি। ঘটনার পর এক দিন তিনি এলাকায় থাকলেও পরে ঢাকায় পালিয়ে যান। তিনি নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত বলে এর আগে নুর উদ্দিন, শামীম ও শরীফের জবানবন্দিতে উঠে আসে বলে নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহ আলম।

পিবিআইয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল গতকাল রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের জানান, নুসরাত হত্যার পরিকল্পনা বৈঠকে কারা কারা উপস্থিত ছিলেন তাঁদের নামও কাদের জানিয়েছেন। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে তাঁদের পরিচয় জানাতে রাজি হননি তিনি।

এদিকে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো তদন্তদল দুই দিন ধরে সোনাগাজীতে কাজ করছে। আজ শুক্রবার ফেনীতে অবস্থান করবে দলটি। গতকালও দলটি সোনাগাজীতে নুসরাতের পরিবার, মাদরাসার শিক্ষকসহ বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলেছে।

ডিআইজি রুহুল আমিন বলেন, স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও মাদরাসা পরিচালনা কমিটি যদি ২৭ মার্চের ঘটনার পর যথাযথ ব্যবস্থা নিত তাহলে ৬ এপ্রিলের নির্মম ঘটনাটি এড়ানো যেত। মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিনের জড়িত থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, যে-ই জড়িত থাকুক না কেন এবং সেই ব্যক্তিরা যত বড় ক্ষমতাধর হোক না কেন, তাদের সবার বিরুদ্ধেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, অধ্যক্ষ সিরাজ অনেক আগে থেকেই এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে তদন্তে জানা গেছে। তাঁর সমর্থকরাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। মাদরাসা পরিচালনা কমিটির অনেকেই এর সঙ্গে জড়িত বলে তাঁরা প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছেন।

সোনাগাজী মডেল থানা থেকে প্রত্যাহার করা ওসি মো. মোয়াজ্জেম হোসেনের বিষয়ে তদন্তদলের প্রধান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে এ ঘটনায় ওসির গাফিলতি ছিল বলেই তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আমরা আরো বিস্তারিত খোঁজখবর নিচ্ছি।’

ফেনীর পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকারের দায়িত্বে অবহেলার বিষয়ে জানতে চাইলে ডিআইজি রুহুল আমিন বলেন, ‘তদন্তের পরে আমরা বলতে পারব। এ বিষয়ে এখনো স্পষ্ট কিছু বলা যাচ্ছে না।’ তদন্তদলের প্রধান জানান, তাঁরা আজ ফেনীতে কাজ করার পর দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেবেন।

Bootstrap Image Preview