শ্রীলঙ্কার সিরিজ বোমা হামলায় সিনামোন গ্র্যান্ড হোটেলে আত্মঘাতী হামলাকারী হামলার আগে সকালের বুফে নাস্তার জন্য সবার সঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল বলে জানিয়েছে হোটেলের ম্যানেজার।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রবিবার ইস্টার সানডে উপলক্ষে সিনামোন গ্র্যান্ড হোটেলে জড়ো হয়েছিলেন অসংখ্য পর্যটক। সেই সুযোগেই ভিড়ের মধ্যে বোমা বিস্ফোরণ ঘটান হামলাকারী।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হোটেলের এক ম্যানেজার জানান, হামলাকারী ঘটনার আগের রাতে হোটেলে নিজের নাম মোহাম্মাদ আজম নামে রেজিস্ট্রেশন করেন। সকালে খাবারের প্লেট হাতে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি।
ওই ম্যানেজার বলেন, ‘ইস্টার সানডের ছুটিতে হোটেলের রেস্টুরেন্টে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ভিড় ছিল। সেখানে অনেকেই সপরিবারে এসেছিলেন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হামলাকারী লাইনের শেষ প্রান্তে উপস্থিত হন এবং খাবার দেওয়ার সময় বিস্ফোরণ ঘটান। এতে আমাদের এক ম্যানেজার যিনি অতিথিদের অভ্যর্থনা জানাচ্ছিলেন, তিনিও ঘটনাস্থলেই মারা যান।’
তিনি আরও বলেন, ‘বোমা হামলাকারীও সেখানে প্রাণ হারান। তার শরীরের টুকরোগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল, পরে পুলিশ সেগুলো নিয়ে গেছে। এ হামলায় ২০ জনেরও বেশি গুরুতর আহত হন। আমরা তাদের ন্যাশনাল হাসপাতালে পাঠিয়েছি।’
হোটেলের অন্য কর্মকর্তারা জানান, হামলাকারী শ্রীলঙ্কান নাগরিক ছিলেন। শহরে তিনি ব্যবসার কাজে এসেছিলেন বলে জানিয়েছিলেন। হোটেলের রেজিস্টারে তিনি যে ঠিকানা দিয়েছিলেন তা ভুয়া।
শ্রীলঙ্কায় রবিবার আটটি স্থানে ভয়াবহ বোমা হামলার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৯০ জনে পৌঁছেছে। ওই হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৫০০ জন। পুলিশের বরাত দিয়ে আজ সোমবার এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইস্টার সানডের আয়োজনকে ঘিরে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে পৌনে ৯টার মধ্যে কোচচিকাদে এলাকার সেইন্ট অ্যান্থনি চার্চ, কাটুয়াপিতিয়ার সেইন্ট সেবাস্টিয়ানের চার্চ এবং বাত্তিকালোয়ার একটি গির্জায় বোমা হামলা চালানো হয়। এর কিছুক্ষণ পর রাজধানী কলম্বোর তিনটি হোটেল-সাংগ্রি লা, কিংসবারি ও সিনামন গ্র্যান্ড হোটেলেও বোমা বিস্ফোরণ হয়। পরে আরও দুই স্থানে হামলা হয়। এতে ওই হতাহতের ঘটনা ঘটে। তবে হামলার দায় কোনো গোষ্ঠী এখন পর্যন্ত স্বীকার করেনি।
বিবিসি বলছে, হামলায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৬ জন বিদেশি। প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনা জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিমের মেয়ের পরিবার শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলার শিকার হয়েছেন। বিস্ফোরণে সেলিমের মেয়ে-জামাই আহত হয়েছেন। এ ছাড়া সেলিমের নাতি নিহত হয়েছে।
এ হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিশ্বনেতারা।