Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৪ বুধবার, মে ২০২৫ | ৩১ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

আবজাল দম্পতির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা আজ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬ এপ্রিল ২০১৯, ০২:২৭ PM
আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৯, ০২:২৭ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


অবশেষে  সাড়ে ৩৭ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা হচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবজাল হোসেন ও তার স্ত্রী রুবিনা হোসেনের বিরুদ্ধে । কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে যন্ত্রপাতি কেনার নামে ওই অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আজ মামলা করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

বৃহস্পতিবার  ( ২৫ এপ্রিল) কমিশন মামলার অনুমোদন দিয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদকের উপপরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য।

অপর ৮ আসামি হলেন- স্বাস্থ্য অধিদফতরের চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন বিভাগের সাবেক পরিচালক ও লাইন ডিরেক্টর আবদুর রশীদ, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ সুবাস চন্দ্র সাহা, সাবেক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ রেজাউল করিম, কলেজের হিসাবরক্ষক হুররমা আক্তার খুকী, কক্সবাজার জেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সুকোমল বড়ুয়া, একই দফতরের সাবেক এসএএস সুপার সুরজিত রায় দাশ, পংকজ কুমার বৈদ্য এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক উচ্চমান সহকারী খায়রুল আলম। 

 দুদক সূত্র থেকে জানা যায়,  অভিযোগের অনুসন্ধান করেছেন দুদকের উপ-পরিচালক সামছুল আলমের নেতৃত্বে একটি দল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কলেজে যন্ত্রপাতির প্রয়োজন না থাকার পরও স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনুমোদন ছাড়াই কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ রেজাউল করিম যন্ত্রপাতি কেনার উদ্যোগ নেন। ক্রয়সংক্রান্ত কাজ করতে কমিটি গঠনের অনুমতি চেয়ে তিনি চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন বিভাগের সাবেক পরিচালক ও লাইন ডিরেক্টর আবদুর রশীদ বরাবর চিঠি দেন।

তবে সেখানকার অনুমোদন পাওয়ার আগেই অধ্যক্ষ বিভিন্ন কমিটি গঠন করে ফেলেন। চিঠি দিয়ে বিভাগীয় প্রধানদের কাছ থেকে চাহিদাপত্রও চান। তবে চাহিদাপত্র না পেলেও তিনি পছন্দের ঠিকাদার আবজাল হোসেনের স্ত্রী রুবিনা খানমের রহমান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালকে কার্যাদেশ দিয়ে দেন।

রুবিনা খানম স্বাস্থ্য অধিদফতরের পাঁচটি মেডিকেল কলেজ স্থাপন প্রকল্পে স্টেনোগ্রাফার হিসেবে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে যোগ দেন ১৯৯৮ সালে। ২০০০ সালে স্বেচ্ছায় অবসরে গিয়ে প্রতিষ্ঠান গড়ে ব্যবসা শুরু করেন। আবজালের সঙ্গে বিয়ের পর স্বাস্থ্য অধিদফতরে একচেটিয়া ব্যবসা করে এ প্রতিষ্ঠানটি।

দুদকের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, কার্যাদেশ অনুসারে যন্ত্রপাতি সরবরাহ না করেই ভুয়া ও ব্যবহার অনুপযোগী যন্ত্রপাতি বিভিন্ন দেশের লেবেল লাগিয়ে কক্সবাজার মেডিকেলে সরবরাহ করেন। পরে ৪৭ কোটি ৫০ লাখ টাকার বিল জমা দিয়ে ৩৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা তুলে আত্মসাৎ করেন। ওইসব যন্ত্রপাতি এখনও অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে।

দুদক বলছে, আবদুর রশীদ ওই অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধ না করে চাহিদাপত্র না পাওয়া সত্ত্বেও প্রথমে ৩০ কোটি ও পরে সাড়ে ৭ কোটি টাকা রহমান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালকে দিয়ে দেন। এর মাধ্যমে তিনি রুবিনাকে অর্থ আত্মসাতে সহায়তা করেন।

এদিকে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মেডিকেল এডুকেশন শাখার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবজাল হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আবজাল সব মিলিয়ে বেতন পেতেন ৩০ হাজার টাকার। অথচ চড়েন হ্যারিয়ার ব্র্যান্ডের গাড়িতে। ঢাকার উত্তরায় তার ও স্ত্রীর নামে বাড়ি আছে পাঁচটি। বাড়ি আছে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতেও। রাজধানী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জায়গায় আছে অন্তত ২৪টি প্লট ও ফ্ল্যাট। দেশে-বিদেশে আছে বাড়ি-মার্কেটসহ অনেক সম্পদ।

এ সম্পদের বাজারমূল্য হাজার কোটি টাকার বেশি। ৬ জানুয়ারি আবজাল দম্পতির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) বিশেষ পুলিশ সুপার। ১০ জানুয়ারি আবজালকে দুদকে ডেকে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ২১ জানুয়ারি আবজাল দম্পতির সব সম্পদ ক্রোক ও ব্যাংক হিসাবে লেনদেন জব্দের আদেশ দেন আদালত। তবে খবর পাওয়া গেছে, আবজাল দম্পতি দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।

 

Bootstrap Image Preview