Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৭ মঙ্গলবার, জুন ২০২৫ | ৩ আষাঢ় ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

শ্রমিকের স্বার্থ সুরক্ষায় ইসলাম

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩ মে ২০১৯, ০৯:৩৮ AM
আপডেট: ০৩ মে ২০১৯, ১১:০০ AM

bdmorning Image Preview


প্রায় দেড় হাজার বছর আগে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) দুনিয়ায় আগমন করেন। তখন খেটে খাওয়া মানুষের স্বার্থ ছিল উপেক্ষিত ও অবহেলিত। আল্লাহর নবী (সা.) শ্রমিকের মেহনতের কষ্ট বুঝতে পেরেছিলেন। সে জন্য তিনি শ্রমিকদের সামাজিকভাবে মর্যাদা দিয়ে এবং নিজে শ্রম দান করে মালিকের কৃত্রিম অহংবোধ ও আভিজাত্য গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন। ফলে শ্রমিক ও শ্রমের মহিমা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তাঁর অমোঘ বাণী ও প্রণীত নীতি আজও সারা দুনিয়ার মানুষের কাছে অনন্যসাধারণ আদর্শ হিসেবে বিবেচিত।

আল্লাহ প্রদত্ত বিধানের আলোকে মহানবী (সা.) যে শ্রমনীতি ঘোষণা করেছিলেন তা শ্রমিক ও মেহনতি মানুষকে দেখিয়েছিল প্রকৃত মুক্তির পথ। শ্রমিক ও মালিকের সম্পর্ক এবং দুই পক্ষের কর্তব্য ও অধিকার ন্যায়নীতি ও সমতার মাপকাঠিতে নির্ধারণ করেছে ইসলাম। শ্রমিক-মালিক নিছক প্রভু ও ভৃত্যের মতো নয়, বরং এটাকে ভাই-ভাই সম্পর্ক বলে অভিহিত করেছেন মহানবী (সা.)।

আল্লাহর নবী (সা.) বলেন,  ‘যারা তোমাদের কাজ করছে তারা তোমাদেরই ভাই। আল্লাহ তাদের তোমাদের অধীনস্থ করে দিয়েছেন।’ (বুখারি শরিফ)

আল্লাহর নবী (সা.) শ্রমিকের অধিকার বিষয়ে অন্য এক হাদিসে উল্লেখ করেছেন, ‘তোমরা যা খাবে তা থেকে তাদের (শ্রমিককে) খাওয়াবে এবং যা পরিধান করবে তা তাকেও পরিধান করতে দেবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)

মালিকরা যে ধরনের ভালো ও পুষ্টিকর খাবার খায়, শ্রমিকের খাবারও যদি সে ধরনের হয়, তাহলে শ্রমিকের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত হবে। এবং এতে যথাযথভাবে কাজ করতে সক্ষম হবে।

শ্রমিকরাও মানুষ। তাদের শক্তি-সামর্থ্য ও মানবিক অধিকারের প্রতি লক্ষ্য রাখার বিষয়টি উল্লেখ করতে গিয়ে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘মজুরদের সাধ্যের অতীত কোনো কাজ করতে তাদের বাধ্য করবে না। অগত্যা যদি তা করাতে হয় তবে নিজে সাহায্য করো।’ (বুখারি)

মালিকের প্রতি শ্রমিককে তার অধিকার নিশ্চিত না করার পরিণাম সম্পর্কে বলতে গিয়ে মহানবী (সা.) কঠোর বাণী উচ্চারণ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে আমি কঠিন অভিযোগ উপস্থাপন করব—যে ব্যক্তি আমার কাউকেও কিছু দান করার ওয়াদা করে তা ভঙ্গ করল, কোনো স্বাধীন ব্যক্তিকে বিক্রয় করে যে তার মূল্য আদায় করল এবং যে ব্যক্তি অন্যকে নিজের কাজে নিযুক্ত করে পুরোপুরি কাজ আদায় করে নিল, কিন্তু তার মজুরি দিল না—ওরাই সেই তিনজন।’ (মিশকাত)

শ্রমিকের মজুরি যথাসময়ে পরিশোধ করার প্রতি গুরুত্বারোপ করতে গিয়ে মহানবী (সা.) বলেছেন,  ‘মজুরকে তার গায়ের ঘাম শুকানোর আগেই মজুরি পরিশোধ করে দাও।’ (ইবনে মাজাহ)

আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, মালিক-শ্রমিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের ভিত্তিতে ইসলাম যে শ্রমনীতি ঘোষণা করেছে, তার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করা গেলে শ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদা অবশ্যই সুরক্ষিত হবে। দূর হবে মালিক-শ্রমিক বিরোধ আর প্রতিষ্ঠিত হবে শ্রমের আসল মর্যাদা।

Bootstrap Image Preview