চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা দিতে এসে প্রধানমন্ত্রীর স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত এমদাদুল হককে অপহরণ ও লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় উপাচার্যের কাছে গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এতে পরীক্ষা দিতে এসে তাকে বাধা দেয়ার সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি।
রবিবার দুপুরে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর কাছে এ প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটির আহ্ববায়ক সহকারী প্রক্টর হেলাল উদ্দিন আহমেদ।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর সম্পৃক্ততার প্রমাণও মেলেছে। প্রকাশিত তদন্ত প্রতিবেদনে গত ২৭ মার্চ অনুষ্ঠিত হওয়া প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের সুপারিশ করে পুনঃপরীক্ষায় এমদাদুল হকের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতেও বলা হয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে সুপারিশের ভিত্তিতে চবি উপাচার্য বলেন, ২৭ মার্চ এমদাদুল হককে বাধা দেয়ার ঘটনায় তার দেয়া অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি তিনটি সুপারিশ দিয়েছে। এতে তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা মেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নিতে প্রক্টরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি পূর্বের নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে এমদাদুল হকের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে পুনঃপরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক সহকারী প্রক্টর হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ২৭ মার্চ এমদাদুল হকের ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের সাক্ষাৎকার ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তাকে বাধা দেয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। আমরা তদন্ত কমিটির পক্ষে তিনটি সুপারিশ প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছি। এ ঘটনায় ৭ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া হলেও আনোয়ার হোসেন, আসিফ মাহমুদ শুভ ও মোকসেদ আলী নামে তিন শিক্ষার্থী জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য,গত ২৭ মার্চ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক পদের শিক্ষক নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা দিতে এলে সাত ছাত্রলীগ নেতাকর্মী তাকে অপহরণ ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ করেন। পরে তাকে শিবির তকমা দিয়ে পুলিশের কাছে তুলে দেয়া হয়। এতে সেদিন পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি এমদাদুল। এ ঘটনায় আদালতে মামলাও করেন তিনি।
সর্বশেষ, গত ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক নিয়োগে সাক্ষাৎকার (মৌখিক পরীক্ষা) বাতিল করে আবারও পরীক্ষা নিতে প্রার্থী মো.এমদাদুল হকের রিট আবেদন দুই সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তি করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই বিভাগের প্রভাষক পদে (যে পদে এমদাদুল আবেদন করেছিলেন) শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা জারি করে আদালত।