ফেনীর সোনাগাজীতে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার শিকার মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান চাকরিতে যোগ দিয়েছেন।
সোমবার সকালে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ট্রেইনি অ্যাসিস্ট্যান্ট (ক্যাশ) অফিসার পদে কাজে যোগ দিলে তাকে ব্যাংকটির সোনাগাজীর ডাকবাংলো শাখায় পদায়ন করা হয়।
চাকরি পেয়ে মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিজাম চৌধুরীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তারা আমার বোন নুসরাতের ওপর ঘটে যাওয়া নৃশংস ঘটনায় আমাদের পরিবারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী আমার বোনের বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন। আজ শুধু আমার পরিবার নয়, গোটা দেশবাসী নুসরাত হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায়।
এর আগে গত ১৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে যান নুসরাতের মা শিরিন আক্তার, বাবা একেএম মুসা, বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ও ছোট ভাই রাশেদুল হাসান রায়হান।
প্রধানমন্ত্রী নুসরাতের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সান্ত্বনা ও সমবেদনা জানিয়ে নুসরাতের ভাইকে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের নিয়োগপত্র তুলে দেন। একই সঙ্গে নুসরাতের পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এ সময় এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিজাম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী নিজাম চৌধুরীকে নুসরাতের ছোট ভাই রায়হানের পড়াশোনার প্রতি খেয়াল রাখতে বলেন। নিজাম চৌধুরী স্বাচ্ছন্দ্যে শুধু পড়াশোনা নয়, ভবিষ্যতে রায়হানের চাকরিরও নিশ্চয়তা দেন।
উল্লেখ্য, প্রসঙ্গত, ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি।
কয়েকজন তাকে কৌশলে ছাদে ডেকে এনে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে করা মামলা তুলে নিতে চাপ দেন। তিনি অস্বীকৃতি জানালে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
এ ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলা, পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলমসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান। ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ রাফি।
এর আগে ২৭ মার্চ ওই ছাত্রীকে নিজ কক্ষে নিয়ে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।
যৌন নিপীড়নের ঘটনায় রাফির মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। ওই মামলা তুলে নিতে অস্বীকৃতি জানানোয় রাফির গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।