কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে যাত্রীবাহী বাসে এক নার্সকে ধর্ষণের পর হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। নিহত ওই নার্সের নাম শাহিনুর আক্তার তানিয়া (২৪)।
সোমবার (৬ মে) রাত সাড়ে ৮টায় ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের গজারিয়া জামতলী নামক স্থানে এঘটনা ঘটে। সে কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে এবং ইবনে সিনা হাসপাতালে নার্সের চাকরি করত।
চলন্ত বাসে ধর্ষণের পর ধর্ষণকারীরা তাকে কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযুগে বাসের চালক ও হেলপারকে আটক করছে পুলিশ।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকালে নার্স তানিয়া বিমানবন্দর কাউন্টার থেকে স্বর্ণলতা পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে উঠেন।
মহাখালী থেকে কটিয়াদী হয়ে বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত চলাচল করে স্বর্ণলতা নামক বাসটি। পিরিজপুর নেমেই বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিলো। বাসে উঠার পর থেকে বাবা এবং ভাইদের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলে সে। রাত ৮টার দিকে মঠখোলা বাজার অতিক্রম করার সময় তার বাবাকে ফোনে জানান ২৫-৩০ মিনিটের ভিতর বাড়ি পৌঁছতে পারবেন।
কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছেও তার ভাইয়ের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হয়। পিরিজপুর পৌঁছতে পাঁচ-দশ মিনিট লাগবে বলে জানান। এর পরই তানিয়ার আর কোন সাড়া পাওয়া যায়নি মুঠোফোনে।
স্বজনরা ধারণা করছেন, কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ডে বাসের সমস্ত যাত্রী নেমে যাওয়ার পর গাড়ির ড্রাইভার এবং হেলপার কৌশলে কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ড থেকে তাদের সাথের চার-পাঁচজনকে গাড়িতে তোলেন। ভৈবর-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের গজারিয়া জামতলী নামক নীরব জায়গায় তানিয়াকে জোরপূর্বক চলন্ত গাড়িতেই ধর্ষণ করে এবং গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এ দিকে মৃত্যুর পর ধর্ষণকারীরা রাত পৌনে ১১টার দিকে দুর্ঘটনা কথা বলে কটিয়াদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওই নার্সের লাশ ফেলে রেখে যায়।
এ দিকে পাঁচ মিনিটের কথা বলে দীর্ঘ সময়েও তানিয়া পিরিজপুর বাসস্ট্যান্ডে স্বর্ণলতা বাস না পৌঁছায় তার ভাই মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। গভীর রাতে সংবাদ পায় শাহিনুরের লাশ কটিয়াদী হাসপাতাল থেকে থানায় নেয়া হয়েছে।
তানিয়ার ভাই কফিল উদ্দিন সুমন জানায়, শাহিনুরের সাথে একটি এলইডি ১৯ ইঞ্চি টেলিভিশন, একটি স্যামসং এনড্রয়েট মোবাইল ফোন ও বেতনের ১৫-১৬ হাজার টাকা ছিল।
কটিয়াদী থানার ওসি (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় ড্রাইভার নূরুজ্জামান (৩৯), হেলপার লালন মিয়াকে (৩৩) আটক করা হয়েছে। তানিয়ার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, ব্যাগ, কাপড় চোপড় পাওয়া গেছে।
ময়না তদন্তের জন্য লাশ কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে ধর্ষণের পর হত্যা কিনা। নিহতে শরীরে আঘাতে চিহ্ন রয়েছে বলে জানান তিনি।