সুনামগঞ্জ থেকে প্রকাশিত স্থানীয় একটি দৈনিকের শাল্লা উপজেলা প্রতিনিধি জয়ন্ত সেনের উপর নৃশংস হামলা চালিয়ে তার ডান পা ভেঙ্গে দিয়ে হাওরের পাশে নির্জন স্থানে ফেলে রেখে যায় সংঘবদ্ধ দুর্বৃত্তরা। জয়ন্ত হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক।
মঙ্গলবার (৭ মে) সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে উপজেলার জয়পুর ও নিয়ামতপুর গ্রামের মধ্যবর্তী হাওরের নির্জন স্থানে তার ওপর হামলা চালিয়ে পা ভেঙ্গে দিয়ে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্ত চক্রের সদস্যরা।
জয়ন্তর পরিবারের লোকজন জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুর্বে এলাকার গোপাল রায়, রিংকু রায়, ইন্দ্র রায় সহ কয়েকজ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জয়ন্ত সেনকে গিয়ে তার বাড়িতে ঘেরাও করে।
এক পর্যায়ে দুবৃক্তদের ভয়ে সন্ধ্যায় তিনি বাড়ি থেকে সুনামগঞ্জে যাবার পথে ওৎ পেতে থাকা দুবৃক্তরা নিয়ামতপুর ও জয়পুর নামক স্থানে তাকে বেধড়ক মারধর করে তার ডান পা ভেঙ্গে দেয়। মাথা, গলা, কাধ ও বুকে দেশিয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে তিনি সংজ্ঞাহীন হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাকে মৃত ভেবে হাওরের নির্জন স্থানে ফেলে রেখে যায়।
এলাকার লোকজন বাড়ি আসার পথে তাকে সংজ্ঞাহীন দেখতে পেয়ে তার পরিবারের লোকজনকে খবর দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। হামলাকারীরা জয়ন্তর ব্যবহৃত লেপটপ ও দুটি মোবাইল ফোন ও বাড়ি থেকে নিয়ে আসা নগদ ২০ হাজার টাকাও ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আনন্দপুর গ্রামের গোপাল রায় এলাকার এক হতদরিদ্র শিশু কন্যাকে কয়েক মাস আগে ধর্ষণের চেষ্টা করলে সাংবাদিক জয়ন্ত সেন সংবাদ প্রকাশ করেন। গোপালের ভয়ে পরে ওই শিশুকন্যাকে অন্যস্কুলে ভর্তি করান অসহায় পিতা।
এ ঘটনায় সাংবাদিক জয়ন্ত অসহায় ওই শিশু কন্যা ও তার পরিবারের স্বপক্ষে সংবাদ প্রকাশ করায় ক্ষুব্দ হয় গোপাল ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা।
এই বিষয়ে শাল্লা থানার ওসি মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিক জয়ন্ত আমাকে মঙ্গলবার দুপুরে তার ওপর হামলার শংকার বিষয়টি জানিয়েছিলেন। আমি দুষ্কৃতিকারীদের আমার অফিসার দিয়ে তাকে বিরক্ত না করার জন্য জানিয়েও দিয়েছিলাম।
প্রসঙ্গত, গোপালকে গত ১০ মার্চ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দিন স্কুলের ভোট কেন্দ্র দখল করে ভোট দিলে প্রশাসন গোপালকে গ্রেপ্তার করে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে। এছাড়াও গোপাল গ্রামের স্কুলের জায়গা দখল করেও স্থায়ী বসতঘর নির্মাণ করায় সাংবাদিক জয়ন্ত সংবাদ প্রকাশ করতে পারেন এমন আশংকা থেকেও তাকে হত্যার উদ্দেশেই ওই হামলার ঘটনাটি ঘটিয়ে বলে জানান পরিবারের লোকজন।
ওই ঘটনায় গোপাল রায় পুর্বের সংবাদ প্রকাশের জের মেটাতে রিংকু রায়কে প্রভাবিত করে সাংবাদিক জয়ন্ত সেনের উপর হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করায়।