মাংস বিক্রির জন্য পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার নিয়ম থাকলেও নওগাঁর বদলগাছীতে তা মানা হচ্ছে না। উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের বিভিন্ন হাট-বাজারে কোনো ধরণের ডাক্তারি পরীক্ষা ছাড়াই জবাইকৃত পশুর মাংস বিক্রি হচ্ছে। এ অবস্থায় রোগাক্রান্ত পশুর মাংস খেয়ে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে উপজেলার প্রায় তিন লাখ মানুষ।
জানা যায়, রোগাক্রান্ত-দুর্বল গরু, ছাগল জবাই করে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। সব ক্ষেত্রেই ডাক্তারি পরীক্ষার নিয়ম মানা হচ্ছে না। এমনকি মাঝে মধ্যে মৃত পশুর মাংস বিক্রিরও অভিযোগ রয়েছে ক্রেতাদের। এ বিষয়ে কোনো তদারকি না থাকায় কসাইদের সি-িকেটের কাছে জিম্মি হয়ে আছে উপজেলাবাসী।
উপজেলার বদলগাছী, কোলা, গোবরচাঁপা, ভা-ারপুর, চাঁদপুর, পাহাড়পুর, মিঠাপুর বাজারে মাংসের দোকান আছে। কিন্তু অধিকাংশ হাট-বাজারেই কসাইখানা নেই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মাংস বিক্রেতা বলেন, সামান্য অসুস্থ গরু-ছাগল কম দামে কেনা যায়। তাই মাঝে মধ্যে আমরা দু-একটা অল্প অসুস্থ গরু-ছাগল কিনে থাকি। এতে ভালো দাম পাওয়া যায়।
সাধারণ মানুষের অভিযোগ, উপজেলা প্রণিসম্পদ দপ্তর ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ বিশেষ সুবিধার বিনিময়ে বিষয়টির দিকে নজরদারি করছেন না এবং নানা অযুহাতে এড়িয়ে যাচ্ছেন।
উপজেলা সদরের বদলগাছী হাটে গবাদি পশু জবাইয়ের সময় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদীর চরের নোংড়া পরিবেশে কসাইরা পশু জবাই করছে। জবাইকৃত অধিকাংশই ছিল রোগা ও দুর্বল ধরণের। এছাড়া পশু জবাইয়ের পর চামড়া ছাড়ানোর সাথে সাথে কন্টেইনারে করে নিয়ে আসা নদীর নোংড়া পানি মাংসে ঢালতে শুরু করে। একটি গরুতে চামড়া ছাড়ানোর পর থেকে মাংসের দোকানে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত প্রায় ২০ লিটার নদীর নোংড়া পানি মাংসে ঢালা হয় যা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, জবাইয়ের আগে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা দরকার এবং জবাইয়ের পর মাংস পরীক্ষা করা দরকার। কিন্তু সেটা সম্ভব হয় না।
তিনি আরও বলে, পশু জবাই হয় শেষ রাতে। সেসময় গিয়ে তদারকি করা সম্ভব নয়। এজন্য তিনি নির্দিষ্ট সময়ে পশু জবাই করা ও নির্দিষ্ট সময়ে মাংস বিক্রির পরামর্শ দেন। তিনি বলেন শুধু বদলগাছী সদর হাটে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় কিন্তু বাহিরের বাজারগুলোতে গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা সম্ভব হয় না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুম আলী বেগ বলেন, এ বিষয়ে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি তাৎক্ষণিক কসাই নেতাদের সাথে ফোনে কথা বলে তাদের নিয়ম-নীতি মেনে পশু জবাই করার নির্দেশ দেন।