আধুনিক পৃথিবীতে মানুষ যেখানে বিদ্যুৎ ছাড়া কোনো কিছু কল্পনাই করে না। যেখানে ঘরের পাখা থেকে শুরু করে মোবাইল, ল্যাপটপ সব কিছুতেই বিদ্যুতের প্রয়োজন। তবে এখনও বিশ্বে এমন কেউ কেউ আছেন যারা স্বেচ্ছায় আধুনিক পৃথিবীর অনেক সুবিধা বাদ দিয়ে প্রকৃতির মাঝেই বসবাস করতে ভালবাসেন। ভারতের পুনেতে বসবাসরত এমনই এক প্রকৃতিপ্রেমীর খবর জানা গেছে। যার বয়স ৭৯ বছর হলেও বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ ছাড়াই জীবন কাটাচ্ছেন তিনি।
হেমা সানে নামের ওই নারী ফুলে পুণে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বোটানিতে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। এরপর বহু বছর তিনি পুণের গারওয়ারে কলেজে অধ্যাপনা করেন।
সূত্র থেকে জানা গেছে, প্রকৃতির প্রতি আন্তরিক ভালোবাসার কারণেই বিদ্যুতের সুযোগ সুবিধা থেকে সারাজীবন দূরে থেকেছেন হেমা। পুনের বুধওয়ার পেটের একটি ছোট্ট কুঁড়ে ঘরে বসবাস করেন তিনি। বিভিন্ন ধরনের গাছ এবং পাখি বেষ্টিত হেমার বাড়িতে সকাল শুরু হয় পাখিদের আওয়াজে, রাত্রি নামে ল্যাম্পের আলোতে।ওই কুঁড়েঘরে হেমার সঙ্গী হিসেবে থাকে একটা কুকুর, দুইটি বিড়াল, একটি নেউল এবং অনেক অনেক পাখি।
হেমা বলেন, ‘অনেকে আমাকে পাগল ভাবেন। কিন্তু তাতে আমার কিছু যায় আসে না।’
ড. হেমা সানে জানান, সারা জীবনে তিনি বিদ্যুতের প্রয়োজন অনুভব করেননি। লোকেরা প্রায়ই আমাকে জিজ্ঞেস করে যে আপনি কীভাবে বিদ্যুৎ ছাড়াই বাঁচেন? আমি ওদের পাল্টা জিজ্ঞেস করি বিদ্যুৎ নিয়ে আপনি কীভাবে থাকেন?
ড. হেমার ভাষ্য মতে, পাখিরাই তার বন্ধু। যখনই তিনি বাড়ির কাজ করেন তখনই ওরা তার কাছে আসে।
হেমা বলেন, ‘মানুষজন প্রায়ই আমাকে জিজ্ঞেস করে, ঘরটা বেঁচে দিচ্ছেন না কেন, অনেক টাকা পাবেন! আমি ওদের সবসময় বলি, বেঁচে দিলে কে এই গাছ-পাখিদের যত্ন নেবে? আমি তো ওদের সাথেই থাকতে চাই।’
উদ্ভিদবিদ্যা ও পরিবেশ বিষয়ে এ পর্যন্ত অনেক বইও লিখেছেন অধ্যাপক হেমা।