দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার রাণীরবন্দর বাজারে অবাধে বিক্রি হচ্ছে অসুস্থ আর রোগাক্রান্ত গরু ছাগলের মাংস। কম বেশী প্রতিটি কসাই তাদের বাসা বাড়িতে ব্যবহার করছে ডিপফ্রিজ। সকালে বিক্রির জন্য রাতে জবাই করা মাংস ফ্রিজে রাখছে তারা।
বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে ডাক্তারি ফিটনেস সনদের প্রয়োজন থাকলেও তার কোনো তোয়াক্কাই করে না মাংস ব্যবসায়ীরা। এতে একদিকে যেমন প্রতারিত হচ্ছে গ্রাহক অন্যদিকে ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে স্থানীয়দের স্বাস্থ্য।
জনসাধারণের অভিযোগ, অধিকাংশ কসাই অসুস্থ ও রোগাক্রান্ত গরু লোক চক্ষুর অন্তরালে রাতের অন্ধকারে জবাই করে সকালে বস্তাভর্তি মাংস বাজারে নিয়ে ফ্রেশ গরুর মাংস বলে উচ্চমূল্যে বিক্রি করে। এসব পশু জবাই ক্ষেত্রে মানা হয়না কোন আইন । রাণীরবন্দরে নিধারিত জায়গায় পশু জবাই করার কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে রাতের বেলা কসাইদের বাসা বাড়ীর পাশে বাশঁ-ঝাড় অথবা ঝোপের আড়ালে।
জবাইয়ের আগে প্রত্যেকটি পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার দায়িত্ব উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস কর্তৃক দেখভাল করার কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে না। রোগাক্রান্ত গরু কম দামে কিনে বেশি দামে মাংস বিক্রি করছে মাংস ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে রাণীরবন্দর বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম ৪৮০ টাকা থেকে ৫২০ টাকা । প্রতি কেজি ছাগলের মাংসের দাম ৬৪০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত।
মাংস ক্রেতা রাজ্জাক হোসেন, মানিক হোসেন, রেজাউল ইসলামসহ অনেকে বলেন, গরুটি সুস্থ না অসুস্থ তা বোঝার কোনো উপায় নেই। অনেক সময় গাভী গরু জবাই করে মাংস বিক্রি করে। তবে এসব যাদের দেখার দায়িত্ব তারা দেখছেন না।
তারা আরও বলেন, রমজান মাসে এসব অসুস্থ গরুর মাংস বিক্রি করা মোটেই কাম্য নয়। চড়া মূল্যে কিনা মাংস আমরা একটু ভালো খেতে চাই। তাই উপজেলা প্রশাসনের নজরদারী প্রয়োজন না হলে অচিরেই স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বে এই এলাকার মানুষ।
এদিকে,চিরিরবন্দরের বিভিন্ন হাট-বাজারে ও পাড়া-মহল্লায় ডাক্তারি পরীক্ষা ছাড়াই রোগাক্রান্ত গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ জবাই করে বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে চিরিরবন্দর প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: গোলাম রব্বানী বলেন, রমজান মাসে মাংস ক্রেতাকে এমন ভাবে প্রতারিত করলে মাংস ব্যবসায়ীদের (কসাই) ছাড় দেয়া হবেনা । তবে কেউ যদি কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তাহলে তাৎক্ষণিক তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।