ঠাকুরগাঁওয়ে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী বিথিকা রায়ের (১২) পেট অপারেশন করে টিউমারের ভেতর থেকে আরেক মৃত শিশুর শরীরের হাত, লিভারসহ নানা অংশ পাওয়া গেছে।
শুক্রবার (১০ মে) শহরের হাসান এক্স-রে ক্লিনিকে অপারেশন করেন ডা. মো. নুরুজ্জামান জুয়েল। অপারেশনের পর থেকে শিশু বিথিকা সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে।
বিথিকা রায় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের বাবুল রায়ের কন্যা। সে স্থানীয় মলানপুকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী।
বাবুল রায় জানান, গত দুই সপ্তাহ আগে হঠাৎ করেই তার কন্যা বিথিকা রায়ের শারীরিক পরিবর্তন ঘটতে থাকে। তার পেট হঠাৎ করেই ফুলতে থাকে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়ে পরিবারের লোকজন। সবার ধারণা হয় শিশু বিথিকা হয়তো কোনো লম্পটের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়ে অন্তসত্ত্বা হয়ে পড়েছে।
সেই ভয়ে গোপনে নিজ এলাকায় ডাক্তার না দেখিয়ে তারা রংপুরের এক ডাক্তারের কাছে ছুটে যায়। ডাক্তার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানায় বিথিকার পেটে বড় আকারের টিউমার রয়েছে, যা জরুরীভিত্তিতে অপারেশন করা প্রয়োজন।
পেশায় দিনমজুর বাবুল রায় রংপুরে অপারেশন করার সামর্থ্য না থাকায় তার শিশু মেয়েকে নিয়ে ঠাকুরগাঁও হাসান এক্স-রে ক্লিনিকে ভর্তি করেন। সেখানে ডা. মো. নুরুজ্জামান জুয়েলের শরণাপন্ন হন তারা। ডা. জুয়েল ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশন হওয়ায় প্রথমে রাজি হননি।
পরে বাবুলের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় অপারেশন করে তার পেটে প্রায় চার কেজি ওজনের টিউমার বের করা হয়। পরে টিউমারটির ভেতরে আরেক শিশুর অবস্থান নিশ্চিত করেন ডা. জুয়েল। সেখানে শরীরের হাত, লিভারসহ নানা অংশ বিদ্যমান।
এ ব্যাপারে ডা. মো. নুরজ্জামান জুয়েল বলেন, মেডিকেল সায়েন্সে এটাকে বলে ‘বাচ্চার পেটের ভেতরে বাচ্চা’। জন্মগতভাবে বিথিকা জমজ। কিন্তু কোনো কারণবশত আরেক শিশু পৃথিবীর মুখ দেখতে পায়নি। এটা বিথিকার জন্মের সময় থেকে তার পেটে থেকে যায়।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বিথিকার শারীরিক অবস্থা ভালো। তার আর কোনো ঝুঁকি নেই বলে জানান ওই চিকিৎসক।