চীনে উইঘুরসহ অন্যান্য মুসলমান সংখ্যালঘুদের বন্দিশিবিরে আটকে রেখে নির্যাতনের নীতিকে সমর্থন জানিয়েছেন সৌদি সিংহাসনের উত্তরসূরি মোহাম্মদ বিন সালমান।
তিনি বলেছেন, এটা বেইজিংয়ের অধিকার। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রপন্থা উৎখাতে কাজ করার অধিকার চীনের রয়েছে।
ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের পর পশ্চিমা দেশগুলোর অসন্তোষের মুখে চীনের সঙ্গে শত শত কোটি ডলারের বাণিজ্য চুক্তি সইয়ের মধ্যে রয়েছে সৌদি আরব।
সৌদি যুবরাজকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, উগ্রমতাদর্শের প্রচার ঠেকাতে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করতে হবে।
বন্দিশিবিরে ১০ লাখের বেশি উইঘুর মুসলমানকে আটকে রেখেছে চীন। উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রেক্ষাপটে সেখানে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চলছে বলে দাবি করছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তর অর্থনীতির দেশটি।
নৃতাত্ত্বিক তুর্কি জাতিগোষ্ঠীর সদস্য উইঘুররা ব্যক্তিগত জীবন যাপনে ইসলাম চর্চা করেন। তারা চীনের পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্য এশিয়ার বিভিন্ন অংশে বসবাস করেন।
সন্ত্রাসবাদ সমর্থনের অভিযোগে ওয়েস্টার্ন জিনজিয়াং অঞ্চলের সংখ্যালঘুদের দোষারোপ করছে চীন। কাজেই তাদের ওপর নজরদারি অব্যাহত রেখেছে দেশটি।
দেশটির কমিউনিস্ট সরকার রমজানে উইঘুরের মুসলিমদের রোজা রাখার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
চীনের অন্যান্য প্রদেশে আইনটি কার্যকর হলেও জিনজিয়াং প্রদেশে এর প্রবণতা বেশি। উপবাস বা ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের প্রতি বিশেষ আগ্রহকে চরমপন্থার প্রতীক হিসেবে দেখে চীন সরকার।
রমজান উপলক্ষে জিনজিয়াংয়ের খাদ্য অধিদফতরের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, অন্যান্য সময়ের মতো রমজানেও খাবার জায়গাগুলো খোলা থাকবে। এ ছাড়া রমজানে রোজা, তারাবির জন্য রাত জাগরণ ও অন্যান্য ধর্মীয় বিষয় পরিহার করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সি উইঘুর নামে একটি ওয়েসবাইটের তথ্যমতে, পৃথিবীতে চীনই একমাত্র দেশ, যেখানে মুসলমানদের রোজা রাখতে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষেধ করা হয়েছে। তিন বছর ধরে জিনজিয়াংয়ের উইঘুরের মুসলমানদের রোজা রাখার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। অন্য সূত্রে জানা যায়, রমজান মাসে সরকারি দফতর, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্কুলগুলোতে মুসলিমদের বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়।
এদিকে তাদের দুর্দশার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে সৌদি আরবের এই প্রভাবশালী যুবরাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন উইঘুররা। কারণ বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের অধিকার দেখভালোর একটা ঐতিহ্য আছে সৌদি আরবের।কিন্তু মুসলমান নেতৃবৃন্দ উইঘুরদের সংকট নিয়ে এ পর্যন্ত কখনো চীনের সঙ্গে আলোচনা তোলেননি।