Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৩ বৃহস্পতিবার, জুলাই ২০২৫ | ১৯ আষাঢ় ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

মূল্যের ঊর্ধ্বগতিতেও ২৯ বছরে খাবারের দাম বাড়েনি যে দোকানে

স্কুলপড়ুয়াদের জন্য খাবারের দাম অর্ধেক

বিডিমর্নিং ডেস্ক দা
প্রকাশিত: ১৩ মে ২০১৯, ০৩:১৩ PM
আপডেট: ১৩ মে ২০১৯, ০৩:১৪ PM

bdmorning Image Preview


বাজারের সব জিনিসেরই দাম বেড়েছে। কিন্তু প্রায় তিন দশক ধরে একই দাম ধরে রেখেছেন ভারতের কলকাতার এক খাবার বিক্রেতা।

২৯ বছর আগের দাম অপরিবর্তিতই রেখেছেন বিক্রেতা মঙ্গল! এখনো তাঁর দোকানে ২৫ এবং ৫০ পয়সায় কচুরি পাওয়া যায়। তেলেভাজার দাম এখনো মাত্র এক টাকা! তবে ছাত্রছাত্রীরা পাবে অর্ধেক দামে, মানে ২৫ পয়সায়। একটা তেলেভাজা- ১ টাকা।

পঞ্চাশোর্ধ্ব দোকানি লক্ষ্মীনারায়ণ ঘোষ কলকাতার মানিকতলার মুরারিপুকুর এলাকায় কচুরি, তেলেভাজার দোকান চালান। তাঁর ডাকনাম, মঙ্গল অথবা মংলা।

প্রায় তিন দশক আগে ১৯৯০ সালে মিটার বক্সের একটি পরিত্যক্ত ঘরে তিনি কচুরির দোকান দিয়েছিলেন। তখনকার বাজারমূল্য অনুসারে প্রতিটি কচুরির দাম ছিল ৫০ পয়সা। ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি স্কুল রয়েছে। পড়ুয়ারা অনেকেই ছুটির পর বা টিফিনের সময় ভিড় জমাত দোকানে। তাদের জন্য কচুরির দাম অর্ধেক করে দিয়েছিলেন মঙ্গল।

স্কুলের ইউনিফর্ম পরে এলে কচুরির দাম নেওয়া হত ২৫ পয়সা করে।  সন্ধ্যায় অবশ্য কচুরি নয়, মঙ্গলের দোকানে আলুর চপ, মোচার চপ, ধোঁকার চপ, বেগুনি, পেঁয়াজির আয়োজন থাকত। তিন দশক আগের বাজারদর অনুযায়ী মঙ্গল সেসবের দাম নির্ধারণ করেছিলেন ১ টাকা করে।

বাজারের জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও সে জানার আঁচ তিনি ফেলতে দেননি তাঁর ২৯ বছরের পুরনো দোকানে। এখনও তাঁর দোকানে ২৫ এবং ৫০ পয়সায় কচুরি পাওয়া যায়। তেলেভাজার দাম এখনও এক টাকা!

এই দোকান ছাড়া অন্য কোনো উপার্জনের মাধ্যম নেই মঙ্গলের। এত কম দাম নিয়ে কী করে সংসার চলে? এ বিষয়ে মঙ্গল বলেন, ‘সমস্যা তো একটু হয় বটেই। কিন্তু যা হোক করে সংসার চালিয়ে নিই। যখন দোকান শুরু করেছিলাম, তখন আলুর কেজি ছিল ৫০ পয়সা, এখন ১৫-২০ টাকা। কিন্তু এতদিন যখন বাড়াইনি, কোনওদিন আর দাম বাড়াব না।’

কেন? মঙ্গলের জবাব, ‘পাড়ার মধ্যে দোকান তো, সবাই এতদিন ধরে খাচ্ছেন। স্কুলের বাচ্চাগুলো ভিড় করে আসে, তৃপ্তি পাই। এতদিন পরে দাম বাড়ালে অনেকে দুঃখ পাবেন। কচুরির সাইজ একটু ছোট করেছি। চপ অবশ্য আগের মতোই আছে। আমার ঠিক চলে যাবে।’

তবে মঙ্গলের দোকান নিয়ে এলাকাবাসীর বিস্ময়ের শেষ নেই। স্থানীয় বাসিন্দা  অর্ণব সরকার বলেন, ‘এত বছর হয়ে গেল, সবকিছু বদলে গেল, আমরা ছোট থেকে বড় হলাম, কিন্তু মঙ্গলকাকুর কচুরির আর দাম বাড়ল না! আশ্চর্য মানুষ একজন!’

Bootstrap Image Preview