Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ মঙ্গলবার, মে ২০২৫ | ২৩ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

মশা, বায়ুদূষণ ও জলাবদ্ধতা রোধে দুই সিটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবহেলা আছে: হাইকোর্ট

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫ মে ২০১৯, ০৩:১৬ PM
আপডেট: ১৫ মে ২০১৯, ০৩:১৬ PM

bdmorning Image Preview


মশা, বায়ুদূষণ ও জলাবদ্ধতা রোধে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবহেলা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।

বায়ুদূষণ রোধে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের প্রধান দুই নির্বাহীর ব্যাখ্যা শেষে বুধবার (১৫ মে) বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান এবং বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। আর আদালতের তলব আদেশের ব্যাখ্যা দিতে হাজির হয়েছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী মো. আবদুল হাই এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী মোস্তাফিজুল রহমান। তাদের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী ড. নুরুন্নাহার নুপুর।

শুনানির শুরুতে দুই সিটির নির্বাহীরা বায়ু দূষণরোধে গৃহীত পদক্ষেপগুলো প্রতিবেদন আকারে আদালতে দাখিল করেন। সরকার মেট্রোরেলসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প হাতে নেওয়ায় বায়ুদূষণ রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে তারা আদালতকে জানান।

তখন আদালত বলেন, ‘বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রজেক্টের কাজের সময় আপনাদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা দেখা যায় কেন? আপনারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় খোঁড়াখুঁড়ি করেন। তাই সমন্বিতভাবে কাজ করবেন। এছাড়া নাগরিক যেসব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে তাও আপনারা নিশ্চিত করবেন। পয়োনিষ্কাশন, জলাবদ্ধতা ও মশা নিধনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।’

আদালত বলেন, ‘সামনে বর্ষা মৌসুম আসছে। একটু বৃষ্টি হলেই বিভিন্ন এলাকায় হাঁটুপানি উঠে যায়। আবার মশার উৎপাতও বেড়ে যায়। তাই আগামী বর্ষায় মশার উৎপাত কমাতে পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। বাংলাদেশে অনেক বিদেশি বসবাস করেন, বেশ কয়টি দূতাবাসও রয়েছে। দেশে বিনিয়োগের আরও সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সেগুলো লক্ষ্য রাখতে এবং সচেতন হয়ে আরও কর্মমুখী হতে হবে।’

আদালত আরও বলেন, জনগণ যেভাবে ট্যাক্স দিচ্ছেন তাতে নাগরিক সুযোগ-সুবিধা পাওয়া তাদের অধিকার। তাই সব অনিয়ম ও প্রতিবন্ধকতা থেকে বেরিয়ে অচিরেই সব সমস্যা সমাধান করতে দুই সিটির নির্বাহীদের নির্দেশ দেন আদালত।

পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, ‘এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার বায়ুদূষণের মাত্রা পরিমাপ করে এবং দূষণ রোধে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তার ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। যার ধারাবাহিকতায় আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছিল। কিন্তু বায়ুদূষণ রোধের উপযুক্ত জবাব ওই প্রতিবেদনে না উঠে আসায় সন্তুষ্ট হতে পারেননি আদালত। তাই গত ৫ মে ঢাকার দুই সিটির প্রধান নির্বাহীকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। আজ তারা আদালতে হাজির হয়ে প্রতিবেদন দাখিল করে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু আদালত সে ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হতে না পেরে তাদের আবার অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে সময় দিয়েছেন।’

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে রিট আবেদনটি দায়ের করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। সে রিটের শুনানি নিয়ে গত ২৮ জানুয়ারি রাজধানী ঢাকার বায়ুদূষণ বন্ধে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুল জারির পাশাপাশি বায়ুদূষণ রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশও দেন। রাজধানীর যেসব এলাকায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে ১৫ দিনের মধ্যে সেসব এলাকা ঘেরাও করে পরের দুই সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে আদালতকে অবহিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তাদের ওই আদেশ পালন করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। যার ধারাবাহিকতায় মামলাটি পুনরায় শুনানিকালে আদালত রাজধানী ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেওয়ায় হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং এ বিষয়ে আদেশ দেন।

এরপর গত ১৩ মার্চ ঢাকার বায়ুদূষণের মাত্রা পরিমাপ করে এবং দূষণ রোধে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা প্রতিবেদন আকারে দাখিল করতে পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।

Bootstrap Image Preview