তরুণ, শিক্ষিত ও ইংরেজিভাষী শ্রমিকদের সুবিধা দিতে নতুন অভিবাসন পদ্ধতি চালুর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশ্যে দেওয়া এক বক্তৃতায় তিনি বর্তমান ‘চেইন মাইগ্রেশন’ পদ্ধতি পাল্টে ফেলার প্রস্তাব দিয়েছেন বলেও বিবিসি জানিয়েছে।
চেইন মাইগ্রেশন প্রক্রিয়ায় নাগরিকত্ব পাওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরাও ধীরে ধীরে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হওয়ার সুযোগ পান।
ট্রাম্প শুরু থেকেই এ প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করে ‘মেধাভিত্তিক অভিবাসন’ চালুর কথা বলে আসছিলেন।
“নতুন এ পরিকল্পনায় মার্কিন অভিবাসন পদ্ধতি নিয়ে ঈর্ষা করবে আধুনিক বিশ্ব। খোলা দরজা নীতিতে আমরা খুশি, আমাদের দেশকে আমরা এভাবেই সৃষ্টি করতে চেয়েছি। কিন্তু অভিবাসীদের বড় অংশেরই আসা উচিত মেধা ও দক্ষতার ভিত্তিতে,” রোজ গার্ডেনে দেওয়া বক্তৃতায় বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
যুক্তরাষ্ট্র এখন মোট অভিবাসীর ১২ শতাংশ দক্ষতার ভিত্তিতে নেয়; ট্রাম্প এ সংখ্যাকে প্রাথমিকভাবে ৫৭ শতাংশ করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন।
“এর চেয়ে বেশি করা যায় কিনা, তাও দেখা যেতে পারে,” বলেছেন তিনি।
সামনের দিনগুলোতে সীমান্তে নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হবে এবং আশ্রয়প্রার্থীদের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বলেও জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
বিরোধী ডেমোক্রেট পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতারা ট্রাম্পের নতুন এ অভিবাসন পরিকল্পনাকে অগ্রহণযোগ্য বলে অভিহিত করেছেন।
‘ড্রিমারদের’ নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়ে কিছু না থাকায় নতুন পরিকল্পনাটির কড়া সমালোচনাও করেছেন তারা।
শিশু অবস্থায় বাবা-মা ও আত্মীয়স্বজনের হাত ধরে যুক্তরাষ্ট্রে আসা লাখ লাখ বাসিন্দা এখনও দেশটির নাগরিকত্ব পাননি; এদেরকেই ‘ড্রিমার’ নামে ডাকা হয়।
ট্রাম্পের নতুন পরিকল্পনাটি পাস হতে হলে তা ডেমোক্রেট নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদে অনুমোদিত হতে হবে।
“তারা (রিপাবলিকান) কি বলতে চান- আমাদের দেশে এতদিন ধরে যারা এসেছেন তাদের মেধা নেই, কেন, তাদের প্রকৌশল ডিগ্রি নেই বলে?,” প্রশ্ন ছুড়েছেন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের ডেমোক্রেট স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের নতুন এই প্রস্তাব প্রতিনিধি পরিষদে মুখ থুবড়ে পড়ার সম্ভাবনাই বেশি।
অনেকের ধারণা. এ অভিবাসন পরিকল্পনার সূত্র ধরে ট্রাম্প আগামী বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে রিপাবলিকানদের ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করতে পারেন।
অভিবাসন ইস্যুতে রিপাবলিকান এ প্রেসিডেন্টের অবস্থান বরাবরই কঠোর।
অবৈধ অভিবাসী আটকাতে দেয়াল নির্মাণের জন্য চলতি বছরের শুরুর দিকে মেক্সিকো সীমান্তে জরুরি অবস্থাও জারি করেছিলেন তিনি।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ওই সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক শরণার্থী ‘ক্যারাভান’ও আসছে। এদের ঠেকাতে ট্রাম্প সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছেন। প্রয়োজনে সীমান্তটি পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ারও হুঁশিয়ারি আছে তার।