স্কুলের সহপাঠীদের ভৎর্সনা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করলেন যুক্তরাষ্ট্রের এক তরুণী। এমনকি আত্মহত্যার আগে সে বিকৃত যৌনাচারে বাধ্য হয়েছিল বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল।
মায়া ভিজকার্রন্ডো-রিওস (১৬) নামে ওই তরুণী তার বাড়ি ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করে গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি। নিহত তরুণী হ্যারি এস. ট্রুমান হাই স্কুলের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার পরিবার জানায়, মায়া মৃত্যুর কয়েকমাস আগ থেকেই স্কুলে শারীরিক হেনস্থা ও নেতিবাচক মন্তব্যের শিকার হয়েছে।
মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগে দুই তরুণ মায়াকে বিকৃত যৌনাচারে বাধ্য করেছিলো। এরপর তাকে কটাক্ষও করা হয়েছিলো বলে আরও জানায় তার পরিবার। অপমান সহ্য করতে না পেরে সেদিন একটু আগেই বাড়িতে চলে আসে। এরপরই উঁচু দালান থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করে সে।
মেয়ের অপমৃত্যুর জন্য তার পরিবার নিউ ইয়র্ক সিটির শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষকেই দুষছেন। অভিযোগপত্রে তারা জানিয়েছেন, স্কুলে মায়াকে হেনস্থার বিষয়টি কর্তৃপক্ষ জেনেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
মৃত্যুর আগে মায়া স্কুল কর্তৃপক্ষ-কাউন্সিলরদের কাছে অভিযোগ করলেও তার কথায় কেউ গুরুত্ব দেননি। এমনকি নিয়মিত ভৎর্সনার কারণে মায়া যে রেগুলার স্কুলে অনুপস্থিত থাকতো, তাও আমলে নেয়নি কর্তৃপক্ষ। মৃত্যুর সময় স্কুলের ব্যাগ পিঠে নিয়েই লাফ দেয় মায়া।
তরুণীর পরিবারের অভিযোগ, মায়া স্কুলের পরামর্শক, অধ্যক্ষকে বিষয়টি জানাতে গেলে তারা তাকে ক্লাসরুমে পাঠিয়ে দেন এবং তাকে জানিয়ে দেওয়া হয়, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কিছুই করেনি।
মায়ার বাবা জানান, ‘আমি তাকে (মায়া) জিজ্ঞেস করেছিলাম, কী ঘটছে এসব। কেন সে নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছে না। জবাবে আমার মেয়ে বলেছিলো, তার কিছু সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু হেনস্থার বিষয়ে কিছু বলেনি। ও মারা যাওয়ার পরই আমি সব জানতে পারি।
মায়ার মৃত্যুর কয়েক সপ্তাহ আগেই তার পরিবার একজন পরামর্শকের শরণাপন্ন হয়েছিলো। তবে তা উপযুক্ত ছিলো না মায়াকে হেনস্থা থেকে বাঁচানোর ক্ষেত্রে, এমনটাই জানালেন তার বাবা।
এদিকে মায়ার এক বান্ধবি জানিয়েছে, ঘটনার দিন মায়া স্কুলের এক পরামর্শকের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেই পরামর্শক এ বিষয়ে মায়ার পরিবারকে কিছু জানায়নি। বিষয়টি সামনে আসার পরই ওই পরামর্শককে চাকুরিচ্যুত করা হয়।