Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৮ মঙ্গলবার, জুলাই ২০২৫ | ২৩ আষাঢ় ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

রাজশাহীতে ‘কৃত্রিম ফুসফুস’ বানালো তিন কিশোরী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৭ জুন ২০১৯, ০৬:০৪ PM
আপডেট: ১৭ জুন ২০১৯, ০৬:০৪ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


রাজশাহীতে শুরু হয়েছে জাতীয় পর্যায়ের স্কিলস কম্পিটিশন-২০১৮। আর এ প্রতিযোগীতার মঞ্চে চৌকস একটি উদ্ভাবন নজর কাড়ছে সবার। সেটি হলো কৃত্রিম ফুসফুস। রাজশাহীর তিন কিশোরী রুমান্তা হোসেন মৌ, নাইমা আক্তার আঁখি ও বিপাশা খাতুন মিলে বানিয়েছে এই কৃত্রিম ফুসফুস।

মৌ-আঁখি-বিপাশা ত্রয়ীর বানানো কৃত্রিম ফুসফুস একেবারেই নতুন কোনো উদ্ভাবন নয়। এর আগে মানুষের কৃত্রিম ফুসফুস আবিস্কার করে সারাবিশ্বে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন বাংলাদেশি তরুণ বিজ্ঞানী আয়েশা আরেফিন টুম্পা। তবে টুম্পার সঙ্গে রাজশাহীর তিন কিশোরীর পার্থক্য হলো এরা কেউই বিজ্ঞানী না। ষোলোর গণ্ডি পার হওয়া তিনজনেই মূলত কলেজ শিক্ষার্থী।

মৌ-আঁখি-বিপাশা পড়ছেন রাজশাহী মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে। সেখানেই ক্লাসের ফাঁকে তিনজনে মিলে মানুষের জন্য কৃত্রিম ফুসফুস বানিয়েছে। যেটি বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে খুবই উপযোগী ও সাশ্রয়ী একটি প্রকল্প। এর মাধ্যমে চিকিৎসা ব্যয় বহুলাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।

এই তিন ক্ষুদে উদ্ভাবক জানিয়েছেন, তাদের এই যন্ত্র রোগীর অবস্থা অনুযায়ী নলের মাধ্যমে শ্বাসনালীতে সংযুক্ত করা সম্ভব। এখানে আলাদা করে কোনো অক্সিজেন সিলিন্ডারের প্রয়োজন হবে না। কেননা প্রকৃতি থেকে এটি অক্সিজেন সংগ্রহ করবে। এদিক থেকে প্রচলিত ভেন্টিলেটরের তুলনায় এটি আধুনিক।

নিজেদের উদ্ভবন প্রসঙ্গে রুমান্তা হোসেন মৌ বলে, প্রচলিত ভেন্টিলেটরের দাম ৭ থেকে ১০ লাখ টাকা। আমরা চেয়েছিলাম কম খরচে এই যন্ত্র তৈরি করতে। আমরা আশাবাদী যে, আমাদের যন্ত্রটি ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় ব্যবহার উপযোগী করে তৈরি করা সম্ভব। দেশের মানুষের জন্য এই সামান্য কাজটুকু করতে পেরে আমরা অনেক বেশি আনন্দিত ও গর্বিত।

আঁখি ও বিপাশা বলে, কলেজে পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে পুরো কাজটি করেছি। এখন সবাই যেভাবে বাহবা দিচ্ছে সেটা আমাদের আরও অনেক স্বপ্ন দেখাচ্ছে। এরপর আরও নতুন কিছু উদ্ভাবনের জন্য চেষ্টা শুরু করব আমরা।

কেবল কৃত্রিম ফুসফুস নয়, জাতীয় পর্যায়ের স্কিলস কম্পিটিশন-২০১৮‘তে প্রতিযোগিতায় জায়গা পেয়েছে আরও অনেক অভিনব উদ্ভাবন। যেখানে অ্যান্ড্রয়েড-এর সাহায্যে যুদ্ধজাহাজ চালনা, আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা, ফুড স্টোরেজ বাই সোলার রেফ্রিজারেশন, ডিজিটাল রেলওয়ে কন্ট্রোল সিস্টেম, প্লাস্টিক থেকে জ্বালানি তেল তৈরির কৌশল, স্মার্ট আরবান ট্রাফিক কন্ট্রোল সিস্টেম, ব্রিক ফিল্ডস পলিউটেড এয়ার ফিল্টারিং, বর্ডার কন্ট্রোলার রোবট, চলমান যানবাহন থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ জনকল্যাণমুখী উদ্ভাবনগুলো বেশ প্রশংসিত হচ্ছে।

রোববার (১৬ জুন) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আয়োজিত জাতীয় পর্যায়ের স্কিলস কম্পিটিশন-২০১৮ ঘুরে দেখেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

ডা. দীপু মনি বলেছেন, আমাদের দেশের কিশোর-কিশোরীরা যে কতটা মেধাবী, সেটা এখানে না এলে বুঝতে পারতাম না। এদের প্রতিটা উদ্ভাবন আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমি এই কিশোরদের চোখ দিয়ে ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে সারা পৃথিবীর নেতৃত্বের জায়গায় দেখতে পাচ্ছি। শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে আমার দায়িত্ব, তাদের যতদূর সম্ভব সামনে এগিয়ে দেওয়া। অবশ্যই আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। কারণ এরাই প্রকৃত বাংলাদেশ।

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, উন্নত বিশ্বের সব দেশ কারিগরি শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে উন্নতির শিখরে আরোহণ করেছে। আমরা এখন উন্নতির পথে এগিয়ে যাচ্ছি। এরাই আমাদেরকে পথ দেখিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা আর পথ হারাবো না।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন স্কুল অ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট ২০১০ সাল থেকে স্টপ স্কিল কম্পিটিশন আয়োজন করছে। এবারের প্রতিযোগিতায় সহযোগী হিসেবে রয়েছে কানাডা ও বিশ্ব ব্যাংক।

Bootstrap Image Preview