কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে পৃথক বন্দুকযুদ্ধে রোহিঙ্গাসহ তিনজন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে উখিয়ায় বিজিবি’র সঙ্গে এক রোহিঙ্গা ও টেকনাফ পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুই ভাই নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থল থেকে ইয়াবা ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
শুক্রবার (২৮ জুন) ভোর রাতে পৃথক ঘটনায় টেকনাফের হ্নীলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পশ্চিমে পাহাড়ে ও উখিয়ার রহমতের বিল এলাকায় এ ‘বন্দুকযুদ্ধে’র ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্চিম সিকদার পাড়া এলাকার মৃত মাহমুদুর রহমান প্রকাশ বাইট্টা মাদুর দুই ছেলে আব্দুর রহমান (৩০) ও আব্দুস সালাম (২৬) ও উখিয়ার থাইংখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নুরুল কবিরের ছেলে মোহাম্মদ নুর (২৫)।
কক্সবাজার ৩৪ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) অতিরিক্ত পরিচালক মেজর আশরাফ উল্লাহ রনি জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে উখিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকার রহমতের বিলে টহল দেওয়ার সময় দায়িত্বরত বিজিবি’র সদস্যদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে এক রোহিঙ্গা ইয়াবা কারবারি নিহত হয়েছে। এসময় ১৫ হাজার পিস ইয়াবা, একটি দেশীয় বন্দুক, ২টি খালি কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত রোহিঙ্গা মোহাম্মদ নুর (২৫) ওই এলাকা দিয়ে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করার সময় বিজিবির প্রতিরোধের মুখে পড়ে। এসময় বিজিবিকে লক্ষ্য করে গুলি চালালে বিজিবিও পাল্টা গুলি করে। এক পর্যায়ে তার অন্যান্য সহযোগীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়। মৃতদেহটি উখিয়া থানা পুলিশের মাধ্যমে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে উখিয়া থানায় সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।
এদিকে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত দুই ভাই ছিলেন ইয়াবা কারবারি। শুক্রবার ভোররাতে তাদের অবস্থান নিশ্চিত করে তাদের আটক ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য অভিযানে যায় পুলিশ। এসময় উপস্থিতি টের পেয়ে এই দুই ভাইসহ তাদের অন্যান্য সহযোগী সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে গুলি চালালে এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে দুটি দেশীয় এলজি, ৭ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, ১২ রাউন্ড খালি খোসা, দুটি কিরিচ ও দুটি চাকুসহ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আব্দুর রহমান ও আব্দুস সালমকে উদ্ধার করা হয়। গুলিবিদ্ধদের চিকিৎসার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তারা মারা যায়। তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
অভিযোগ রয়েছে, বন্দুকযুদ্ধে নিহত দুই ভাই গত ২১ জুন সকালে টেকনাফের পশ্চিম পানখালীর ইদ্রিসের ছেলে মো. ইসমাঈলকে (২৫) ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। এছাড়া গত দেড় মাস আগে একই এলাকার মৃত আব্দুল জাব্বারের পুত্র জাহেদ হোছনকে (৬৫) কথা কাটাকাটির জের ধরে বেধড়ক পিটিয়ে পঙ্গু করে দেয়। চলতি বছরের গত ৪ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় ইব্রাহীম নামের এক যুবককে ছুরিকাঘাত করে নাড়ি-ভূঁড়ি বের করে।