Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২১ বুধবার, মে ২০২৫ | ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

রিফাত হত্যা মামলার প্রধান আসামী নয়ন বন্ড ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২ জুলাই ২০১৯, ০৯:১৫ AM
আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৯, ০৯:৩৭ AM

bdmorning Image Preview


বরগুনা দিবালোকে প্রকাশ্যে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার অন্যতম প্রধান আসামি সাব্বির হোসেন নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার (২ জুলাই) জেলার পুরাকাটার পায়ারা নদীর পড়ে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।​ এ ঘটনায় আহত হয়েছেন চার পুলিশ সদস্য। বিষয়টি আরটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন। বরগুনা জেলার পূর্ববুড়ির চর এলাকায় চায়না প্রকল্পের বেড়িবাঁধে এই বন্দুকযুদ্ধ হয়। 

ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি, দুটি শর্টগানের গুলির খোসা এবং তিনটি দেশীয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় এএসপি শাজাহানসহ চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

বরগুনার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মারুফ হোসেন এ খবর নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রিফাত হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাব্বির হোসেন নয়ন ওরফে নয়ন বন্ডকে গ্রেফতার করতে বরগুনা সদর উপজেলার বুড়ির চর ইউনিয়নের পুরাকাটা নামক এলাকায় ভোর সোয়া ৪টার দিকে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি চালায় নয়ন বন্ড ও তার সহযোগীরা।

পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। গোলাগুলির এক পর্যায়ে নয়ন বন্ড বাহিনী পিছু হটে। পরে ঘটনাস্থলে তল্লাশি করে নয়ন বন্ডের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নয়ন বন্ডের বিরুদ্ধে আটটি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এসব মামলায় নয়ন বন্ডকে অভিযুক্ত করে বিভিন্ন সময় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ। এসব মামলার মধ্যে দুটি মাদক মামলা, একটি অস্ত্র মামলা এবং হত্যাচেষ্টাসহ পাঁচটি মারামারির মামলা রয়েছে।

এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় মামলার এজাহারভুক্ত ১১ নম্বর আসামি অলি ও ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা অভিযুক্ত তানভীর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

এছাড়া, নাজমুল হাসান, সাগর ও সাইমুন নামে অপর তিনজন বর্তমানে পুলিশি রিমান্ডে রয়েছেন।

এদিকে মামলার ১২ নম্বর আসামি টিকটক হৃদয় গ্রেফতার হলেও তিনি বরগুনা জেলা পুলিশের কাছে পৌঁছায়নি।

দুপুরে জেলা পুলিশ কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন জানান, রিফাত হত্যাকাণ্ডে সর্বশেষ গ্রেফতার হওয়া পাঁচ আসামি সাইমুন, সাগর, অলি, নাজমুল ও তানভীরকে সোমবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়।

প্রসঙ্গত নিহত রিফাত শরীফের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার ৬নং বুড়িরচর ইউনিয়নের বড় লবণগোলা গ্রামে। তার বাবার নাম আ. হালিম দুলাল শরীফ। মা-বাবার একমাত্র সন্তান ছিলেন রিফাত।

বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রী মিন্নিকে বরগুনা সরকারি কলেজে নিয়ে যান রিফাত। কলেজ থেকে ফেরার পথে মূল ফটকে নয়ন, রিফাত ফরাজীসহ আরও দুই যুবক রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালান। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিফাত শরীফকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন তারা।

রিফাত শরীফের স্ত্রী মিন্নি দুর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছুতেই হামলাকারীদের থামানো যায়নি। তারা রিফাত শরীফকে উপর্যুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে চলে যান। পরে স্থানীয় লোকজন রিফাত শরীফকে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে রিফাত শরীফের মৃত্যু হয়।

নিহতের পরিবার জানায়, রিফাতকে কুপিয়ে হত্যায় অংশ নেয় নয়ন বন্ডসহ ৪-৫ জন। রিফাতের সঙ্গে দুই মাস আগে পুলিশলাইন সড়কের আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির বিয়ে হয়। বিয়ের পর নয়ন মিন্নিকে তার প্রেমিকা দাবি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপত্তিকর পোস্ট দিতে থাকেন।

রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বলেন, নয়ন প্রতিনিয়ত আমার পুত্রবধূকে উত্ত্যক্ত করত এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপত্তিকর পোস্ট দিত। এর প্রতিবাদ করায় আমার ছেলেকে নয়ন তার দলবল নিয়ে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।

এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Bootstrap Image Preview