সাতক্ষীরার চাঞ্চল্যকর কিশোর আবু শাহীনের মাথা ফাটিয়ে ইঞ্জিনভ্যান ছিনতাইয়ের ঘটনায় আরও তিন আসামিকে গ্রেফতার করেছে সাতক্ষীরা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
মামলার প্রধান আসামি নাঈমুল ইসলামের স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দীর ভিত্তিতে আজ বুধবার ভোররাতে যশোর জেলার কেশবপুর থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- যশোর জেলার সরফাবাদ গ্রামের আজিজ মোড়লের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (২৫), একই গ্রামের মৃত জোহর আলী মোড়লের ছেলে নরিম মোড়ল (৭৮) ও বাজিতপুর গ্রামের শওকত আলীর ছেলে আজগর হোসেন।
এর আগে গত ১ জুলাই পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি যশোরের কেশবপুর উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের বাবর আলী মোড়লের ছেলে নাঈমুল ইসলামকে তার নিজের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। পরে উদ্ধার করা হয় ছিনতাই হওয়া ভ্যানটি। ওইদিনই ভ্যান ক্রেতা কলারোয়া উপজেলার আলাইপুর গ্রামের মৃত ভোলাই পাড়ের ছেলে আরশাদ পাড় ওরফে নুনু মিস্ত্রি এবং ব্যাটারি ক্রেতা সাতক্ষীরা সদর উপজেলার গোবিন্দকাটি গ্রামের হামজের আলীর ছেলে বাকের আলীকে গ্রেফতার করা হয়।
সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান আজ দুপুর ১২টার দিকে তার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং-এ এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাতে নাঈমুলসহ ভ্যান ও ভ্যানের ব্যাটারি ক্রেতাকে আটক করা হয়।
পুলিশ সুপার জানান, কেশবপুর বাজার থেকে কলারোয়ায় আসার কথা বলে যাত্রী সেজে ছিনতাইকারীরা কিশোর শাহীনের সঙ্গে ৩৫০ টাকা ভাড়া চুক্তি করে। পরদিন শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ভ্যানচালক শাহীনকে নিয়ে তারা সাতক্ষীরা পাটকেলঘাটা থানার ধানদিয়া জামতলা নামক স্থানে নিয়ে আসে। সেখানে তাকে ব্যাপক মারধর করে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মাথা ফাটিয়ে পাশের পাটখেতে ফেলে রেখে ভ্যানটি নিয়ে তিনজন পালিয়ে যায়।
পরে নাঈমুল ও তার দুই সহযোগী সাতক্ষীরা সদরের ঝাউডাঙ্গা বাজারের বাকের আলীর কাছে ৬ হাজার ২০০ টাকায় চারটি ব্যাটারি বিক্রি করে। সেখান থেকে কলারোয়া উপজেলার মির্জাপুর বাজারে গিয়ে মিস্ত্রি আরশাদ পাড় ওরফে নুনুর কাছে ৭ হাজার টাকায় ভ্যানটি বিক্রি করে দেয়।
এ ঘটনায় কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোর্ট গ্রামের শাহীনের পিতা হায়দার আলী বাদী হয়ে সাতক্ষীরা পাটকেলঘাটা থানায় মামলা দায়ের করেন। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এই মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হবে বলে জানান পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান।
এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে শাহীন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিকিৎসার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।