কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের হোটেল সী ক্রাউন থেকে ভুয়া কারা পরিদর্শক দম্পতিকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। তারা সিনিয়র কারা পরিদর্শকের ভুয়া পরিচয় দিয়ে হোটেলটিতে ১৩ দিন যাবৎ অবস্থান করছিলেন।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) হোটেলের বিল পরিশোধের কথা বলায় তারা টালবাহানা করতে থাকে। একপর্যায়ে তারা নিজেদেরকে সিনিয়র কারা পরিদর্শক হিসেবে পরিচয় দেয়। পরে তাদের জেলা কারাগারের জেল সুপার বজলুর রশীদ আখন্দের মুখোমুখি করা হলে তাদের দেয়া পরিচয় ভুয়া বলে স্বীকার করে। এরপর তাদেরকে কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
আটককৃতরা হল- চট্টগ্রামের পটিয়া পৌরসভার পাইকপাড়ার তোফেল আলী মুন্সী বাড়ির মো. সেলিম উদ্দিনের ছেলে রিয়াদ বিন সেলিম এবং তার স্ত্রী শাহনাজ পারভীন মায়া।
বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের আটক করে থানায় নেয়া হলেও সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে মামলা কিংবা অন্য কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। তবে তাদের অভিভাবকরা হোটেল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশের ওসি (অপারেশন) মোহাম্মদ ইয়াছিন।
হোটেল সী ক্রাউন কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে কক্সবাজার জেলা কারাগারের জেল সুপার বজলুর রশীদ আখন্দ জানান, গত ২১ জুন হোটেলে অতিথি হওয়া রিয়াদ-মায়া দম্পতি নিজেদের সিনিয়র কারা পরিদর্শক হিসেবে পরিচয় দেন। হোটেলে ওঠার পর থেকে খাবারসহ যাবতীয় কিছু বাকিতে ভোগ করছিলেন তারা। নিয়ম মোতাবেক তাদের কাছ থেকে রুম ভাড়া আর খাবারের টাকা চাইলে তারা আজ-কাল পরিশোধের কথা বলে টালবাহানা করে আসছিলো। তাদের আচরণে সন্দেহ দেখা দিলে হোটেল কর্তৃপক্ষ জেলা কারাগারে ফোন দেয়।
এছাড়াও বজলুর রশীদ আখন্দ আরও বলেন, কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানানোর পর ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলি। তাদের অসংলগ্ন কথায় চ্যালেঞ্জ করা হলে তারা আসল পরিচয় দেন। তখন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসাইনের সহযোগিতায় তাদের কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশের ওসি (অপারেশন) মোহাম্মদ ইয়াছিন জানান, রিয়াদ-মায়া দম্পতি সিনিয়র কারা পরিদর্শকের ভুয়া পরিচয়ে ওই হোটেলে ১৩ দিন অবস্থান করেছেন। বিষয়টি খুবই সন্দেহের। চট্টগ্রামের স্থায়ী বাসিন্দারা কক্সবাজারে কোনো বিশেষ কাজ ছাড়া ১৩ দিন থাকাটা অস্বাভাবিক। এর পেছনে মাদকের কোনো সংশ্লিষ্টতা আছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, আটক রিয়াদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম আকবর শাহ থানায় ধর্ষণ ও অপহরণের মামলা রয়েছে। বাকি সব বিষয় গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তার পরিবার হোটেল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। হোটেলের সমস্যা সমাধানের পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।