ভারতের আসামে তান্ত্রিকের প্ররোচনায় উলঙ্গ হয়ে আগুনের সামনে প্রার্থনা করছিলেন এক শিক্ষক পরিবারের সদস্যরা। শুধু তাই নয়, পরিবারের এক শিশুকে বলি দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। শিশুটিকে প্রাণে বাঁচাতে গুলি চালিয়েছে পুলিশ ৷ এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছে দুজন। পুলিশ তান্ত্রিকসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে।
ভারতের আসামের উদালগুড়ির গণকপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারতের আসামে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, স্থানীয় এক শিক্ষকের বাড়িতে যাগযজ্ঞের আভাস পেয়ে উৎসুক বেশ কয়েকজন আচমকা শিক্ষকের বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হন। তারা দেখতে পান, সেখানে জ্বলছে যজ্ঞের আগুন। সামনেই নারী-পুরুষ সকলেই নগ্ন অবস্থায় বসে হাতজোড় করে প্রার্থনা করছেন। সেখানে রয়েছেন এক তান্ত্রিকও। কিছুক্ষণ পরে তারা দেখেন ওই পরিবারের ৩ বছর বয়সী এক শিশুকে বলি দেওয়ার চেষ্টা করছে তান্ত্রিক এবং পরিবারের লোকজনরা।
শিশুবলিতে বাধা দিতে গিয়ে ঐ শিক্ষকের পরিবারের লোকজন এবং তান্ত্রিকের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন স্থানীয়রা। খবর দেওয়া হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ততক্ষণে প্রায় রণক্ষেত্রের রূপ নেয় গোটা এলাকা। ওই শিক্ষকের পরিবারের লোকজনরা পুলিশ দেখেই বাড়ির ফ্রিজ, টিভি, মোটরসাইকেলে আগুন লাগিয়ে দেয় এবং পুলিশকে লক্ষ্য করে বাসনপত্র ছুঁড়তে শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় ছুটে আসেন আধা সামরিক বাহিনীর সদস্যরাও।
অবস্থা বেগতিক দেখে বাধ্য হয়ে গুলি চালায় পুলিশ। এতে শিক্ষক এবং তার ছেলে গুলিবিদ্ধ হন। দু'জনকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অবশেষে শিশুটিকে তান্ত্রিকের কবল থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ তান্ত্রিক-সহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে৷
পুলিশ জানায়, বহুদিন ধরে তান্ত্রিকের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক ছিল ওই শিক্ষকের। তান্ত্রিকের কথা মতো মোক্ষলাভের আশায় নিজেদের শিশুকন্যাকে বলি দিতে চেয়েছিলেন তারা। এ ঘটনায় হতবাক গ্রামবাসী।