রাজধানীতে মশা নিধনের জন্য ছিটানো ওষুধে ভেজাল না থাকলেও এর কার্যকারিতা খুব একটা নেই বলে স্বীকার করলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন। আর নতুন ওষুধ না আসা পর্যন্ত বর্তমান ওষুধই নগরে মশা নিধনে ব্যবহার করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সকালে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে নগরীর সুশৃঙ্খল গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার বিষয়ে এক কর্মশালা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
সাঈদ খোকন বলেন, বর্তমানে আমরা (সিটি করপোরেশন) যে ওষুধ ব্যবহার করছি সেটার কার্যকারিতা খুব একটা নেই। আমরা যে ওষুধগুলো ব্যবহার করে থাকি সেটা ওর্য়াল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনন (ডাব্লিউএইচও) কর্তৃক প্রেসক্রিপশন দেওয়া। সুতরা যদি ওষুধ পরিবর্তন করতে হয় তাদের অনুমোদন নিয়ে করতে হবে। কিন্তু এটা করতে সময় লাগবে।
তিনি বলেন, এই সময়ের মধ্যে আমাদের বর্তমান যে ওষুধগুলো রয়েছে, যেগুলো আমরা কিনেছি সেগুলোই এখন আমাদের ব্যবহার করা ছাড়া বিকল্প তেমন কিছু নাই। যদিও এই ওষুধগুলোর কার্যকারিতা কিছুটা কম, কিন্তু তারপরেও হচ্ছে, একেবাবে জিরো এইরকম না। যতটুকু হওয়ার কথা ততটুকু না। মেয়র বলেন, ওষুধের মধ্যে কোন ভেজাল নেই। তবে কার্যকারিতা কিছুটা কমে গেছে।
এ বছর ডেঙ্গুর মাত্রা মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ছে কি–না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সাঈদ খোকন বলেন,গত কয়েক বছরের তুলনায় এই বছর ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব কিছুটা বেশি। কিন্তু এখনও আতঙ্কিত হবার মতো কোন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ থাইল্যান্ডে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সময়ে ২৮ হাজার মানুষ ডেঙ্গুতে আত্রান্ত হয়েছে এবং ৪৩ জনের মূত্যু হয়েছে। এছাড়া সিঙ্গাপুরে এ বছর ৬ হাজার ২২১ জন ডেঙ্গুতে আত্রান্ত হয়েছে। যা ৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী দিল্লী শহরেও ঢাকা শহর থেকে অনেক বেশি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের ঢাকা শহরে যে সমস্ত ডেঙ্গু রোগী আসছেন তারা সারা বাংলাদেশ থেকে আসছেন। এমন নয় এই রোগীগুলো কেবল ঢাকা উত্তর কিংবা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের রোগী।
তিনি বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সারা বাংলাদেশ থেকে ঢাকায় চিকিৎসা নিতে আসছেন এমন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ১০০ প্লাস। এসব রোগী ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ১ হাজার ৮৭৫ জনের বেশি রোগী ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। দুইজনের মূত্যু হয়েছে। আরেকটি মুত্যুর কথা শোনা যায়, একজন ডাক্তার, যিনি তিনবার হ্রদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন এমনটায় জানা গেছে। এই রকম একটা পরিসংখ্যান কোনভাবেই প্রমাণ করে না ডেঙ্গু অনেক ব্যাপকতা ছড়িয়েছে এই কথা আমরা বলতে পারি না।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ডেঙ্গুর ব্যাপকতা যদি ছড়িয়ে যেত, আমরা অব্যশই সেটা জনগণকে অবহিত করতাম। আমরা যে ব্যবস্থাগুলো নিচ্ছি তাতে ডেঙ্গু সম্পন্নভাবে নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় থাকবে, ভয়ের কোন কারণ নেই। আতঙ্কিত হবার মত এখনো কিছু হয়নি।
তিনি বলেন, আগামী ১৫ জুলাই থেকে ৪ শ ৫০টি ভ্রাম্যমাণ মেডিক্যাল টিম প্রতিটি ওয়ার্ডে থাকবে। বিনামূল্য চিকিৎসা দেওয়া হবে, ওষুধ দেয়া হবে। একটি হটলাইন চালু করা হবে। ওই নাম্বারে ফোন করা হলে মেডিকেল টিমি বাসায় চলে যাবে। কোন নাগরিক ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে সঙ্কটাপন্ন হলে প্রয়োজনে ডিএনসিসির উদ্যোগে তাকে বিদেশে পাঠানো হবে।