রাজধানীতে গত আট দিনে মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ২৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৩ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের তথ্য পেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সেই সঙ্গে বিভিন্ন জেলা থেকেও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার খবর আসছে বলে জানিয়েছে কন্ট্রোল রুম। ডেঙ্গু প্রতিরোধে নগর কর্তৃপক্ষের আরো কার্যকর পদক্ষেপের দাবিতে মানববন্ধন করেছে নগরবাসী।
এছাড়া এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত ৩ হাজার ৭১৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত ও ৩ জনের মৃত্যুর কথা বলছে অধিদপ্তর। ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ আয়েশা আক্তার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
চিকিৎসকদের ধারণা- ২৪ ঘণ্টায় ৭৩ জন আক্রান্তের কথা বলা হলেও বাস্তবে এই সংখ্যা আরও বেশি। কেননা, ওই ৭৩ জন হাসপাতালে এসেছেন। কিন্তু সব রোগী হাসপাতালে আসেন না, চিকিৎসকের ব্যক্তিগত চেম্বারেও যান।
এক রোগী বলেন, আমার জ্বর ছিল না, কিন্তু শরীরে দুর্বলতা ছিল। খেতে পারতাম না, এজন্যই ডাক্তার দেখানো, তারপর দেখা গেল ডেঙ্গু জ্বর। প্লাটিলেট কমে যাচ্ছে। এটা ধরা পড়ার পর আমি হাসপাতালে ভর্তি হই।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে- এ বছর (১ জানুয়ারি থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত) আক্রান্ত ৩ হাজার ৭১৫ জনের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৭৩ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ১৩০ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ৯৮ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ১৮৮ জন, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ২৭৪ জন, বারডেম হাসপাতালে ৫১ জন, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ৯৬ জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১১৫ জন, পিলখানা বিজিবি হাসপাতালে ১২২ জন, ঢাকা সিএমএইচে ১৪১ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ১৬জন, বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৬০ জন, ধানমণ্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে ১৪৮ জন, স্কয়ার হাসপাতালে ১৯৩ জন, ধানমণ্ডির কমফোর্ট নার্সিংয়ে ৪ জন, শমরিতা হাসপাতালে ৫৪ জন, ল্যাব এইডে ১ জন, সেন্ট্রাল হাসপাতালে ৪৪০ জন, কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ২৭০ জন, ইউনাইটেড হাসপাতালে ১২৩ জন, খিলগাঁওয়ের খিদমা হাসপাতালে ৪৮ জন, অ্যাপোলো হাসপাতালে ১০৮ জন, আদ দ্বীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪০ জন, ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩১ জন, বিআরবি হাসপাতালে ৪৬ জন, আজগর আলী হাসপাতালে ১১৮ জন, উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৮ জন, সালাউদ্দিন হাসপাতালে ১৩৯ জন, পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৩১ জন ও আনোয়ার খান মর্ডান হাসপাতালে ১৫ জন ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ঢাকা মেডিকেলে এক ইন্টার্ন চিকিৎসক বলছিলেন, গতবারের তুলনায় এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি দেখা যাচ্ছে। ঢাকার যেসব জায়গায় ডেঙ্গু বেশি হয়, রামপুরা, মগবাজার ও বনশ্রী, এসব এলাকা থেকে বেশি আসতেছে।
বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে ভর্তি আছেন ৮০৯ জন রোগী। এর মধ্যে- ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৮০ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ৪৭ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ২০ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ৫৩ জন, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ৪৪ জন, বারডেম হাসপাতালে ১১ জন, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ৩০ জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫৬ জন, পিলখানা বিজিবি হাসপাতালে ১৮ জন, বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪৮ জন, ইবনে সিনা হাসপাতালে ১৩ জন, স্কয়ার হাসপাতালে ৪৬ জন, সেন্ট্রাল হাসপাতালে ৬৯ জন, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ৪৮ জন, ইউনাইটেড হাসপাতালে ৭ জন, খিদমা হাসপাতালে ৭ জন, অ্যাপোলো হাসপাতালে ২০ জন, বিআরবি হাসপাতালে ২ জন, আজগর আলী হাসপাতালে ২৪ জন, উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০ জন, সালাউদ্দিন হাসপাতালে ৩৮ জন ও পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৮ জনের চিকিৎসা চলছে।