ভারতের উত্তরপ্রদেশের উন্নাও জেলায় জয় শ্রীরাম না বলায় কয়েকজন মাদরাসা ছাত্রকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় শহরে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ প্রদর্শনের পরে উন্নাও শহরে ব্যাপকহারে পুলিশ আর বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
যে মাদরাসার ছাত্ররা মার খেয়েছে, সেখানকার কর্মকর্তারা অভিযোগ করছেন, ছাত্রদের দিয়ে জোর করে জয় শ্রীরাম বলানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু ঐ স্লোগান দিতে অস্বীকার করায় তাদের ব্যাপক মারধর করা হয়।
মাদরাসা-দারুল-উলুমের পরিচালক মো. নঈম জানান, কয়েকজন ছাত্র বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় জি আই সি ময়দানে ক্রিকেট খেলতে গিয়েছিল। ১২-১৪ বছরের কয়েকজন ছাত্র যখন ওই মাঠে খেলছিল, সেখানে কয়েকজন বয়সে বড় কিছু ছেলে হাজির হয়। তারা ব্যাট কেড়ে নিয়ে জয় শ্রীরাম স্লোগান দেয়ার জন্য জবরদস্তি করতে থাকে। আমাদের ছাত্ররা জয় শ্রীরাম বলতে অস্বীকার করে। তখন ওই ক্রিকেট ব্যাট দিয়েই মারা হতে থাকে। কয়েকজন ছাত্রের মাথা ফেটে গেছে।
তার অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ বলছে, জবরদস্তি করে জয় শ্রীরাম বলানো হয়েছে বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, ঘটনা তা নয়। কেন মাদরাসা ছাত্রদের মারধর করা হয়েছে, তা তদন্ত করা হচ্ছে।
এ ঘটনায় হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো বলছে, পুলিশ একতরফাভাবে তাদের সদস্য সমর্থকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। মারধর বা জয় শ্রীরাম বলানোর জন্য জবরদস্তি- এসব কিছুই হয়নি।
হিন্দু যুবা বাহিনীর কর্মকর্তা রঘুবংশ বলেন, একটা সামান্য মারামারির ঘটনাতে ধর্মীয় রঙ লাগানো হচ্ছে। ইচ্ছে করেই করা হচ্ছে এটা। যে ভিডিওটা প্রকাশ্যে এসেছে, সেখানে (মাদরাসা) ছাত্ররা জয় শ্রীরাম বলানোর কথা যখন বলছে, সেটা যে কেউ ওদের বলতে শিখিয়ে দিচ্ছে, এটা তো স্পষ্ট।
তিনি আরও বলেন, ঐ ভিডিওটা পরীক্ষা করে দেখা হোক। হিন্দু যুবকদের বিরুদ্ধে পুলিশ যেসব অভিযোগ এনেছে, সেগুলো দ্রুত প্রত্যাহার করতে হবে।
দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির কারণে গোটা শহর জুড়ে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ ছাড়াও রাজ্য সশস্ত্র পুলিশ, যাকে উত্তরপ্রদেশে প্রভিন্সিয়াল আর্মড কনস্ট্যাবুলারি (পিএসি) বলা হয়, সেই বাহিনীও নিয়ে আসা হয়েছে।