বন্যায় এখন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জেলায় ১১৪ জন মারা গেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কন্ট্রোল রুম। গত ২৩ জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন জেলায় মৃতের সংখ্যা ৮৭ থাকলেও গত চারদিনে আরও ২৭ জন মানুষ বন্যার কারণে মারা গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে,পানিতে ডুবে, ডায়রিয়া, সাপের কামড়, বজ্রপাত, বিদ্যুতায়িতসহ পানিবাহিত অন্যান্য রোগে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে জামালপুর, নেত্রকোনা, গাইবান্ধা ও টাঙ্গাইল জেলায়। এছাড়া বগুড়া, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, শেরপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সুনামগঞ্জ, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার জেলায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে, যমুনা ও কুশিয়ারা ছাড়া দেশের অন্য নদীগুলোর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে, উত্তরাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলের ডুবে যাওয়া জেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতি আরও ২৪ ঘন্টা স্থিতাবস্থায় থাকবে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, শনিবার সকাল নয়টা পর্যন্ত সুরমা নদী কানাইঘাটে বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার, সিলেটে ১ সেন্টিমিটার, সুনামগঞ্জে ২০ সেন্টিমিটার, শ্যাওলায় ১৫ সেন্টিমিটার। এছাড়াও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিতাস নদী বিপদসীমার ২৬ সেন্টিমিটার, সোমেশ্বরী নদী কমলাকান্দায় ১ সেন্টিমিটার, ধরলা নদী কুড়িগ্রামে ৪৬ সেন্টিমিটার, ঘাঘট নদী গাইবান্ধায় ২৭ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদী চিলমারিতে ৩২ সেন্টিমিটার, যমুনা নদী ফুলছড়িতে ৫৩ সেন্টিমিটার, বাহাদুরাবাদে ৫৫ সেন্টিমিটার, সারিয়াকান্দিতে ২৫ সেন্টিমিটার, সাজুপুরে ২৫ সেন্টিমিটার, সিরাজগঞ্জে ১৩ সেন্টিমিটার, আত্রাই নদী বাঘাবাড়িতে ২৫ সেন্টিমিটার, ধলেশ্বরী নদী ৪৪ সেন্টিমিটার, পদ্মা নদী গোয়ালন্দ পয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান জানান, যমুনা ছাড়া বাকি নদীগুলোর পানি কমছে। কুশিয়ারা ছাড়া দেশের সব নদীর পানি কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হতে পারে, মধ্যাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
এদিকে, আবহাওয়া অফিস জানাচ্ছে আগামী ২৪ ঘন্টায় সারাদেশে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, বৃষ্টিপাত হলেও আজকালের মধ্যে পানি বাড়ার সম্ভাবনা কম। তবে উজান থেকে ঢল নামলে এই সপ্তাহে আবারও পানি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এবারের বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার পাশাপাশি মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছাবে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে, বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকটও তীব্র হবে। বাড়বে পানিবাহিত রোগ। স্বাস্থ্যঝুঁকির পাশাপাশি বিপুল পরিমাণে ফসল নষ্ট হবে।