Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৭ শনিবার, মে ২০২৫ | ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

সঞ্চালক মুসলিম, তাই চোখ ঢেকে রাখলেন হিন্দু নেতা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩ আগস্ট ২০১৯, ০২:৫০ PM
আপডেট: ০৩ আগস্ট ২০১৯, ০২:৫০ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


মোদির ভারতে ধর্মীয় সহিষ্ণুতা একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। এ নিয়ে শিল্প সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন অঙ্গণের বিবেকবান লোকজন আর্তি জানালেও এগুলো কেয়ার করছে না বিজেপি সরকার। 

কেননা তাদের ক্ষমতায় টিকে থাকার প্রধান অস্ত্রই যে হিন্দুত্ববাদ। এই হিন্দুত্বতাবাদ দেশটিতে এতটাই জেঁকে বসেছে যে ডেলিভারি বয় একজন মুসলিম হওয়ায় জোমোটার খাবার অর্ডার বাতিল করেছিলেন তথাকথিত এক ধর্মপ্রাণ হিন্দু। তা নিয়ে বিতর্ক এখনও চলছে। 

এরই মধ্যে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। এবার টিভি অনুষ্ঠানের সঞ্চালক মুসলিম হওয়ায় গোটা সময় হাত দিয়ে নিজের চোখ ঢেকে রাখলেন এক হিন্দু নেতা। এই অনুষ্ঠান প্রচার হওয়ার পর চারদিকে ছি ছি পরে গেছে।

দক্ষিণপন্থী সংগঠন ‘‌হাম হিন্দু’‌–র প্রতিষ্ঠাতা অজয় গৌতমকে এই জোমোটো বিতর্ক নিয়েই স্থানীয় টিভি চ্যনেল নিউজ ২৪’র একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু অনুষ্ঠানে এসেই ঝামেলা শুরু করেন তিনি।

অজয় গৌতম জানতে পারেন, এই অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করবেন একজন মুসলিম যুবক। এটা শুনেই তিনি বেঁকে বসেন। তার মতো একজন ধর্মপ্রাণ হিন্দুর পক্ষে ‘ম্লেচ্ছ যবনের’সঙ্গে একই টিভি অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া কি করে সম্ভব হয়!

আয়োজকদের জোরাজুরিতে শেষে তিনি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে রাজি হন। কিন্তু এক অদ্ভুদ কাণ্ড করেন। গোটা অনুষ্ঠানে অজয় গৌতম ওই মুসলিম সঞ্চালকের দিকে একবারও চোখ তুলে তাকাননি।

ভুলে যদি ওই মুসলিম যুবকের দিকে তার চোখ যায়, তাই সারাসময় দু হাত দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে রেখেছিলেন।

এই ঘটনার পর অজয় গৌতমকে আর কোনওদিন অনুষ্ঠানে ডাকা হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই টিভি চ্যানেল কর্তৃপক্ষ।

২০১৫ সালে নিজের সংস্থা তৈরি করেছিলেন গৌতম। সংস্থার মূল মন্ত্রই হল ‘‌সম্পূর্ণ স্বরাজ’ যার অর্থ সম্পূর্ণ হিন্দু রাষ্ট্র।’ গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠানের কিছু অংশ চ্যানেল কর্তৃপক্ষ ইউটিউবে আপলোড করেছেন। তারপর থেকেই শুরু হয়েছে গৌতমের সমালোচনা।

এর আগে গত মঙ্গলবার ডেলিভারি বয় মুসলিম হওয়ায় ‌জোমোটোর খাবার বাতিল করেছিলেন জবলপুরের উগ্র হিন্দু মিত শুক্লা নামের ওই গ্রাহক। তার দাবি ছিলো, বদলে দিতে হবে ডেলিভারি পার্সনকে। কিন্তু তার এই অযুক্তিক দাবি মানতে রাজি ছিলো না জোমাটো। তাই অর্ডার বাতিল করেন অমিত শুক্লা।

এ নিয়ে পরে তিনি টুইটারে লেখেন, ‘জোমাটোইনের একটি অর্ডার বাতিল করলাম। ওরা আমার খাবার পৌঁছে দেওয়ার জন্য একজন রাইডারকে বরাদ্দ করেছিল।

 তারা জানিয়েছে যে তারা চালক পরিবর্তন করতে পারবে না এবং বাতিল করার টাকাও ফেরত দিতে পারবে না। আমি জানিয়েছিলাম, আমি যে ডেলিভারি নিতে চাই না, সেই ডেলিভারি নিতে আপনারা আমাকে বাধ্য করতে পারেন না, আমি রিফান্ডও চাই না। অর্ডার বাতিল করে দিন।

পালটা টুইট করে জোমাটো জানায়, ‘খাবারের কোনও ধর্ম হয় না। খাবার নিজেই একটা ধর্ম।’ তাদের এই টুইট সাড়া ফেলে দেয় গোটা ভারতে, জিতে নেয় হিন্দু, মুসলিম নির্বিশেষে সবার মন।

যদিও হিন্দুবাদীরা এখনও বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে জোমোটোকে তুলোধুনো করছে। আর এ থেকেই ভারতে গত বৃহস্পতিবার তৈরি হলো ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার আরেকটি দৃষ্টান্ত।

Bootstrap Image Preview