চটপটি বিক্রি শেষে বাড়ি ফিরছিলেন এক চটপটিওয়ালা। এ সময় পথে কুড়িয়ে পান ৬৩ হাজার ৫০০ টাকা। তবে সেই টাকা নিয়ে তিনি আর বাড়ি ফিরে যাননি। রাতেই চলে যান চেয়ারম্যানের বাড়িতে। ওই টাকা চেয়ারম্যানের হাতে তুলে দেন প্রকৃত মালিককে ফেরত দেওয়ার জন্য। ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার রাতে।
এর পরদিন শুক্রবার চেয়ারম্যান আইয়ূব হোসেন এলাকায় প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে টাকার মালিক খুঁজে বের করে কুড়িয়ে পাওয়া সেই টাকা তুলে দেন আসল মালিকের হাতে।
মহত্বের পরিচয়দানকারী ওই চটপটি বিক্রেতার নাম বেলাল হোসেন। তিনি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কোলা গ্রামের নুরুল হক মোল্যার ছেলে। আর হারানো টাকার মালিক একই উপজেলার পারখুলা গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদের।
বেলাল হোসেন জানান, ‘বৃহস্পতিবার উপজেলার কোলা বাজারে চটপটি বিক্রি করে রাতে বাড়ি ফেরার পথে একটি টাকার বান্ডিল পড়ে থাকতে দেখে তুলে নিই। এর পর কুড়িয়ে পাওয়া এ টাকা নিয়ে ওই রাতেই চলে যাই চেয়ারম্যান আইয়ূব হোসেনের বাড়িতে। তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে আসলে ঘটনাটি খুলে বললে টাকাটা আমার কাছেই রাখতে বলেন। তবে আমার অনুরোধে তিনি শেষ পর্যন্ত রাজি হন টাকাটা রাখার জন্য।’
‘এরপর দুজন মিলে টাকাটা গণনা করে দেখি বান্ডিলে মোট ৬৩ হাজার ৫০০ টাকা আছে। পরদিন এলাকায় প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে চেয়ারম্যান প্রমাণ সাপেক্ষে টাকার মালিককে খুঁজে বের করেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টায় ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে তিনি সম্পূর্ণ টাকা মালিকের কাছে হস্তান্তর করেন,’ যোগ করেন চটপটিওয়ালা।
তিনি একজন অভাবি মানুষ জানিয়ে বেলাল হোসেন বলেন, ‘বাবা মায়ের অভাবের সংসারে ছোট থেকে বড় হয়েছি। সব সময় সৎ উপায়ে কর্ম করে সংসার চালাই। কখনো কারও অর্থের প্রতি লোভ করিনি। প্রকৃত মালিকের হাতে টাকাটা ফেরত দিতে পেরে আমি খুশি।’
এদিকে হারানো টাকা ফিরে পেয়ে প্রতিক্রিয়ায় আব্দুর রশিদ বলেন, ‘আমি নিজেও গরিব মানুষ। ধারদেনা করে কাঠের ব্যবসা করি। আমার হারানো টাকাটা ফেরত পেয়ে মানুষ সম্পর্কে আমার ধারণা পাল্টে গেছে।’এর বিনিময়ে বেলাল হোসেন ও চেয়ারম্যানকে মিষ্টিমুখও করাতে পারেননি বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে কোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ূব হোসেন জানান, ‘অভাব মানুষকে নষ্ট করতে পারে না। বেলাল তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।’