এক কিশোরী অপহরণ করে হত্যার ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে রোমানিয়ায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদত্যাগের পর পুলিশপ্রধান ও শিক্ষামন্ত্রীকে বরখাস্ত করা হয়। এরপরও কিশোরীকে নিখোঁজের পর হত্যার ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে রোমানিয়ার জনগণ।
গত ১৪ জুলাই আলেকজান্দ্রা মাসেসানু (১৫) নামের এক কিশোরীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। দেশটির জরুরি সেবায় তিনবার ফোন করেও যথাযথ সহায়তা পায়নি ওই কিশোরী। তাকে হত্যার ঘটনা জানাজানি হলে দেশটিতে বিক্ষোভ শুরু হয়।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সপ্তাহে এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ইকেতেরিনা আন্দ্রোনেস্কুও বলেছিলেন, ‘অপরিচিত ব্যক্তির গাড়িতে উঠতে নেই’, নিহত কিশোরী মাসেসানুকে এই শিক্ষা যথাযথভাবে দেওয়া হয়নি।
তার এই মন্তব্যকে একদমই ভালোভাবে নেননি দেশটির প্রধানমন্ত্রী ভিওরিকা দানচিলা। অপহরণ ও খুনের পর শিক্ষামন্ত্রীর এমন মন্তব্যকে ‘বড় ভুল’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
আন্দ্রোনেস্কু ঘটনার ভয়াবহতা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন, এমন মন্তব্যও করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। এর জের ধরেই গত শুক্রবার তাকে বরখাস্ত করেন তিনি। এ ঘটনায় বরখাস্ত করা হয় দেশটির পুলিশপ্রধান আয়ন বুদাকে।
এর আগে এই ঘটনায় বিক্ষোভের মুখে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোলাই মোগা পদত্যাগ করেন।
ইউরোপের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় এই দেশটির পুলিশ বলছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর দোবরোসলোভেনি থেকে গত ১৪ জুলাই বাড়ি ফেরার পথে অপরিচিত এক ব্যক্তির গাড়িতে উঠে অপহরণের শিকার হয় কিশোরী মাসেসানু।
পরদিন অপহরণকারীদের জিম্মায় থেকেই পুলিশের জরুরি হটলাইনে তিনবার ফোন করে ওই কিশোরী। পুলিশকে পুরো ঘটনা জানালেও কিশোরীটিকে উদ্ধার করতে পারেনি রোমানিয়ার পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশের ব্যর্থতার প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে গোটা রোমানিয়া।
এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে ৬৫ বছর বয়সী গিওর্গি দিনকাকে আটক করেছে পুলিশ। দিনকার বাড়ি থেকে কিশোরী মাসেসানুর ডিএনএ পাওয়া গেছে বলেও দাবি করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা। দিনকা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে খুনের ঘটনা স্বীকার করে নিয়েছেন বলেও জানিয়েছে পুলিশ।