Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০১ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৫ | ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

কাশ্মীরকে বাঁচাতে ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ চাইলেন ইমরান খান

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ আগস্ট ২০১৯, ০৬:২৭ PM
আপডেট: ০৫ আগস্ট ২০১৯, ০৬:২৭ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


কাশ্মীরের নিরীহ লোকজনের ওপর ভারতীয় হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি ভারতের এই কর্মকাণ্ডকে শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি হুমকি উল্লেখ করে এ বিষয়টির প্রতি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের নজর দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

ইমরান খান রোববার বিকেলে টুইটারে দেয়া এক বিবৃতিতে বলেন, নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সাধারণ নাগরিকদের ওপর যে অত্যাচার চলছে এবং যে ধরনের অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার হচ্ছে, তা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। এই ঘটনার নিন্দা করি। এতে ১৯৮৩ কনভেনশনও লঙ্ঘিত হচ্ছে। বিষয়টি আন্তর্জাতিক শান্তির পরিপন্থি। সেজন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে বিষয়টিতে নজর দেয়া উচিত।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাশ্মীরের মানুষের ভোগান্তির দীর্ঘ কালরাত্রি অবসানের সময় এসেছে। নিরাপত্তা পরিষদের চুক্তি মতো তাদের স্বতন্ত্রতার অধিকার দেয়া উচিত। কাশ্মীর সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানই খুলে দিতে পারে দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও নিরাপত্তা রাস্তা।

কাশ্মীর সঙ্কট সমাধানে ফের মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্ততার দাবি করে ইমরান খান আরো বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কাশ্মীর ইস্যুতে মধ্যস্থতা করতে চেয়েছিলেন। সেটা করার এটাই সময়। কারণ ভারতীয় সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর কার্যকলাপে নিয়ন্ত্রণরেখায় পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে।’

সম্প্রতি পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে মধ্যস্থতা করার অনুরোধ করেছেন। ট্রাম্পের এই বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে ইমরান খান তখন বলেন, ‘এটা হলে ১০০ কোটি মানুষের শুভেচ্ছা আপনার সঙ্গে থাকবে।’

তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ট্রাম্পের ওই দাবি অস্বীকার করে। তার ওই মন্তব্যে ঘিরে ভারতের জাতীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। যদিও এ নিয়ে এখনও মুখ খুলেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

এদিকে ইমরানের ওই টুইটের পর রবিবার রাতেই কাশ্মীরে জরুরি অবস্থা জারি করে এবং সেখানকার রাজনৈতিক দলের নেতাদের গৃহবন্দি করে রেখে আজ সংসদে রাজ্যটিতে কয়েক দশক ধরে আরোপিত ৩৭০ ধারা যা রাজ্যটিকে বিশেষ মর্যাদা দেয়, তা তুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার এই ঘোষণার ফলে ভারতের একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্যটিতে যে নতুন করে সংঘাত শুরু হবে তা বলাই বাহুল্য।

ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ধারাটি কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেয়। এই ৩৭০ অনুচ্ছেদের কারণে জম্মু ও কাশ্মীর অন্য যেকোন ভারতীয় রাজ্যের চেয়ে বেশি স্বায়ত্বশাসন ভোগ করে আসছিলো। সবচেয়ে বড় কথা এ ধারার ভিত্তিতেই কাশ্মীর রাজ্য ভারতের অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। ফলে কাশ্মীরি জনগণের কাছে এই ধারার তাৎপর্য অপরিসীম।

সোমবার সকালে সংসদ অধিবেশন শুরু হতেই তুমুল বাধা ও বাগ-বিতণ্ডার মধ্যে রাজ্যসভায় সংবিধানের ৩৭০ ধারা তুলে দেওয়ার ঘোষণা দেন অমিত। এই মর্মে সরকারের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে, যাতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দ স্বাক্ষরও করেছেন। এই ধারা তুলে নেয়া হলে বিলুপ্ত হবে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা। স্বাভাবিক ভাবেই এই ধারার অধীনে ৩৫এ ধারারও বিলুপ্তি ঘটবে।

এর আগে কাশ্মীর নিয়ে আলোচনার জন্য সোমবার সকালে বৈঠকে বসে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিসভার ঐ বৈঠক শুরু হওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে একান্ত বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এছাড়া জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। স্বরাষ্ট্র সচিব ও অন্য গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তারাও এই বৈঠকে ছিলেন। আর এসব বৈঠকের পরই সংসদে কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দেন অমিত।

৩৭০ ধারা তুলে নেয়ার মাধ্যমে কাশ্মীরের ব্যবচ্ছেদ করারও একটি ষড়যন্ত্র বাস্তাবায়ন করতে চলেছে বিজেপি সরকার, যার জল্পনা কয়েকদিন ধরেই মোনা যাচ্ছিলো। অমিতের এই ঘোষণার ফলে এখন জম্মু এবং কাশ্মীর 'ইউনিয়ন টেরিটরি' বা কেন্দ্রীয়ভাবে শাসিত রাজ্য হিসেবে পরিচালিত হবে। লাদাখ কেন্দ্রশাসিত তৃতীয় একটি এলাকা হিসেবে বিবেচিত হবে।

এর আগে রোববার রাতে রাজধানী শ্রীনগর আর জম্মু অঞ্চলে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। একই সঙ্গে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে রাজ্যের সব স্কুল-কলেজ। গোটা রাজ্যে মোবাইল টেলিফোন আর ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রয়েছে। রোববার স্থানীয় সময় রাত দেড়টা নাগাদ কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা, মেহবুবা মুফতি আর সাজ্জাদ লোনকে গৃহবন্দি করা হয়েছে। রাজ্য জুড়ে চলছে ধরপাকড়।

কাশ্মীর নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই বাতাসে নানা কথা ভেসে বেরাচ্ছিলো। এই রাজ্যটি নিয়ে মোদি সরকার যে কিছু একটা গোপন ফন্দি আঁটছেন তার ইঙ্গিতও পাওয়া যাচ্ছিলো নানা কর্মকাণ্ডে। অমরনাথ যাত্রা বন্ধ করে দিয়ে হঠাৎ করেই কাশ্মীরে পাঠানো হয়েছিল অতিরিক্ত সেনা। পর্যটকদেরও সেখান থেকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছিল। রবিবার সন্ধ্যায় জম্মু-কাশ্মীর পুলিশকে অস্ত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও শোনা যায়। ব্যাপক গন্ডোগোলের আশঙ্কায় সাধারণ মানুষ ভিড় জমাতে থাকে খাবারের দোকান আর পেট্রোল পাম্পগুলোতে।

এই ৩৭০ ধারা বাতিল বিজেপি'র পুরনো রাজনৈতিক এজেন্ডাগুলোর একটি। এই ধারার কারণেই কাশ্মীরের স্থায়ী বাসিন্দারাই শুধুমাত্র সেখানে বৈধভাবে জমি কিনতে পারতেন, সরকারি চাকরি করার সুযোগ পেতেন এবং সেখানে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারতেন।

এখন এই ধারা রদ করার পর সেইসব বাধা পুরোপুরি উঠে যাবে। এরপর ভারতের অন্যান্য স্থানের হিন্দুরা পঙ্গপালের মত ছুটে আসবে উপত্যকার দিকে। অর্থের জোরে তারা দখল করবে নিঃস্ব দরিদ্র কাশ্মিরীদের পৈত্রিক ভূমির অধিকার। বলাবাহুল্য, ভারতীয় সেনাদের নির্যাতন ও নানা বৈষম্যের কারণে দীর্ঘদিন ধরেই অবদমিত উপত্যকার জনতা।

অমুসলিমরা সেখানে এসে সেখানে এসে কেবল জমি কিনেই ক্ষান্ত হবেন এমন নয়, তারা সেখানে সরকারি চাকুরি ও বৃত্তিসহ নানা সুবিধা নেবে। অর্থাৎ দিনে দিনে গ্রাস করে নেবে গোটা উপত্যকা, যা নিয়ে এতদিন ধরে গর্ব করতো সেখানকার বাসিন্দারা।

আসেল এটি তো গোটা ভারতকে মুসলিম শূন্য করার চক্রান্তের একটি অংশ মাত্র, যা তারা দীর্ঘদিন ধরেই বাস্তাবায়িত করার সুযোগ খুঁজছিলো। এবারের ভারতের লোকসভা নির্বাচনে পার্লামেন্ট অকল্পনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার কারণে মোদিরা নিজেদের এই চক্রান্তটি বাস্তবায়িত করার সুযোগ পেলো।

কেননা ভারতীয় সংবিধানে কাশ্মীর সংক্রান্ত ৩৭০ নং ধারা রদ করতে হলে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন ছিলো, যা রাষ্ট্রপতি বিজ্ঞপ্তি জারি করে তা সংশোধন করতে পারেন। ইতিমধ্যে বিজেপি সরকারের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে, যাতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দ স্বাক্ষরও করেছেন।

কেবল কাশ্মীরে নয়, ভারতের বিভিন্ন অংশেই চলছে হিন্দুত্ববাদী শক্তির জবর দখল। কখনও তা বহিরাগত তাড়ানোর নামে (আসামের এনআরসি), কখনও বা অন্য কোনো মোড়কে।

এদিকে মোদি সরকারের কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের ঘোষণায় তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে গোটা ভারত জুড়ে। বিরোধী দল কংগ্রেস কাশ্মীরের এই বিশেষ ক্ষমতা বাতিলের সমালোচনা করে বলেছেন, বিজেপি সংবিধানকে হত্যা করেছে।

আর কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মুফতি মেহবুব আজকের দিনটিকে ‘অন্ধকারতম দিন’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

সোমবার অমিত শাহ বিশেষ মর্যাদা বাতিলের ঘোষণা দেয়ার পরপরই এ নিয়ে টুইট করেন পিপল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা মুফতি মেহবুব। সেখানে তিনি বলেন, ‘আজ ভারতীয় গণতন্ত্রে অন্ধকারতম দিন হিসেবে চিহ্নিত। ১৯৪৭ সালে জম্মু-কাশ্মীরের নেতাদের দ্বিজাতি তত্ত্ব প্রত্যাখ্যান করে ভারতের সাথে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল, এই ঘটনা সেটাই প্রমাণ করে। এই অনুচ্ছেদটি বাতিল করার একতরফা সিদ্ধান্ত অবৈধ ও অসাংবিধানিক, যা ভারতকে জম্মু ও কাশ্মীরে একটি পেশাগত শক্তি হিসাবে পরিণত করবে।’

অনুচ্ছেদ ৩৫এ'তে কী বলা আছে?

সংবিধানের ৩৫এ অনুচ্ছেদ ভারত শাসিত কাশ্মীরের আইন নিয়ন্ত্রকদের রাজ্যের 'স্থায়ী নাগরিক' কারা তা সংজ্ঞায়িত করতে এবং কেন তারা ভারতের অন্য নাগরিকদের চেয়ে তা নির্দিষ্ট করার অনুমতি দেয়।

জম্মু এবং লাদাখ সহ ভারত শাসিত কাশ্মীরের পুরো অঞ্চলেই এই নিয়ম প্রযোজ্য।

তালিকাভূক্ত সকল নাগরিককে একটি স্থায়ী অধিবাসী সার্টিফিকেট দেয়া হয়, যা তাদের কর্মসংস্থান, বৃত্তি এবং অন্যান্য সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা নিশ্চিত করে।

কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে সুবিধাটি তারা পেতো, তা হলো কাশ্মীরে শুধুমাত্র সেখানকার স্থায়ী বাসিন্দাদেরই জমির মালিকানা পাওয়ার অধিকার - যে আইনের কারণে সেখানে শুধু কাশ্মীরের স্থায়ী বাসিন্দারাই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা ঘরবাড়ির মালিকানা পেতে পারতো।

কারা এই অনুচ্ছেদের কারণে সুবিধা পেতো?

এই আইনটি যেদিন থেকে কার্যকর হয়, ১৪ই মে ১৯৫৪, সেদিন থেকে ঐ রাজ্যে যারা বসবাস করছেন এবং যারা ঐ তারিখের পর থেকে অন্তত ১০ বছর কাশ্মীরে বাস করছেন - তাদেরকে স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

তবে স্থায়ী বাসিন্দাদের এই সংজ্ঞা রাজ্যের আইন নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ দুই-তৃতীয়াংশে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখতো।

কীভাবে প্রবর্তিত হলো এই আইন?

১৯২৭ সালে কাশ্মীরের মহারাজা হরি সিং প্রথমবার এই আইন প্রবর্তন করেন।

উত্তরের রাজ্য পাঞ্জাব থেকে কাশ্মীরে মানুষ আসা বন্ধ করতে এই আইন প্রবর্তন করেন তিনি।

ধারণা করা হয়, তৎকালীন প্রভাবশালী কাশ্মীরি হিন্দুদের দাবি অনুযায়ী তিনি ঐ সিদ্ধান্ত নেন। পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীরের কয়েকটি অংশে এখনও এই আইনটি কার্যকর রয়েছে।

ভারতে বিলোপ হওয়ার আগ পর্যন্ত এই আইনটি যেভাবে কার্যকর ছিল, তা ১৯৫৪ সালে প্রবর্তিত হয়েছিল।

অনুচ্ছেদ ৩৭০ এ বর্ণিত বিধান অনুযায়ী ভারতের অভ্যন্তরেও কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেয়া হয়।

১৯৫৬ সালে যখন জম্মু ও কাশ্মীরের সংবিধান তৈরি হয়, সেসময় দুই বছরের পুরনো স্থায়ী বাসিন্দা আইনকে অনুমোদন করে তা।

এই অনুচ্ছেদের তাৎপর্য কী?

এই আইনটি কাশ্মীর রাজ্যের ভৌগোলিক বিশেষত্বকে সুরক্ষা নিশ্চিত করে আসছিল।

যেহেতু ভারতের একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্য ভারত শাসিত কাশ্মীর, অনেক কাশ্মীরির সন্দেহ যে হিন্দুত্ববাদী দলগুলো অন্যান্য রাজ্যের হিন্দুদের কাশ্মীরে গিয়ে বসবাসের জন্য উৎসাহ দেয়।

কাশ্মীরিদের সাথে ভারতের সম্পর্কের ইতিহাস খতিয়ে দেখলে দেখা যায় যে এবিষয়টি কাশ্মীরিরা কখনোই ভালভাবে নেয়নি।

ভারতের শাসনের বিরুদ্ধে ১৯৮৯ সাল থেকে কাশ্মীরে সশস্ত্র অভ্যুত্থান হয়ে আসছে।

ভারত সরকারের অভিযোগ, পাকিস্তান ঐ অঞ্চলে ভারতের শাসনের বিরুদ্ধে হতে থাকা অস্থিরতা উস্কে দেয় - যেই অভিযোগ ইসলামাবাদ সবসময়ই অস্বীকার করে এসেছে।

ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশই কাশ্মীরের পুরো অংশের মালিকানা দাবি করলেও উভয় দেশই রাজ্যটির আলাদা আলাদা অংশ নিয়ন্ত্রণ করে।

১৯৪৭ সালে বিভক্ত হওয়ার পর থেকে পারমাণবিক অস্ত্রক্ষমতা সম্পন্ন দুই দেশ নিজেদের মধ্যে দু'বার যুদ্ধ করেছে এবং কাশ্মীর ইস্যুতে একাধিকবার ছোট ছোট সংঘর্ষে জড়িয়েছে।

এই আইনের সমর্থকরা কী বলছেন?

তাদের বক্তব্য, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রক্ষায় ভারত সরকার যে প্রতিশ্রুতি করেছিল, এই আইন বাতিল করে দিলে সেই প্রতিশ্রুতিকে অবমাননা করা হবে।

তারা আরো মনে করেন, এর ফলে বাইরে থেকে মানুষ গিয়ে কাশ্মীর রাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করতে পারে, যা ঐ অঞ্চলের জনতাত্বিক বৈশিষ্ট্য নষ্ট করবে।

সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি সতর্ক করেছিলেন যে, এই আইনের বিলোপ কাশ্মীরের সাখে ভারতের ভঙ্গুর সম্পর্ক 'পুরোপুরি ধ্বংস করে দিবে'।

Bootstrap Image Preview