বাংলাদেশে এডিস মশা আসার সম্ভাব্য উপায় তুলে ধরে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম জানান, হয়তো রোগী অ্যাফেক্টেড হয়ে এসেছে অথবা কিছু মশা ফ্লাইটে এসেছে। মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সভায় একথা বলেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, এডিস মশার প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। এটা এখন পর্যন্ত যদিও ঢাকাকেন্দ্রিক, তারপরও দেখা যাচ্ছে এখানে এসে অ্যাফেক্টেড হয়ে কেউ কেউ বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। সেখানেও এটা বিস্তার লাভ করতে পারে। ঢাকা থেকে গ্রামে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে…।
বহির্বিশ্বের ডেঙ্গু রোগীর তথ্য তুলে ধরে মন্ত্রী জানান, ফিলিপাইনে এক লাখ ৩৮ হাজার এই মুহূর্তে অ্যাফেক্টেড। ব্যাংকক পোস্ট পত্রিকার তথ্য দিয়ে বলেন, থাইল্যান্ডে বছরের প্রথম ছয় মাসে ২০ হাজার ৭শ মানুষ ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত। গত চার বছরের মধ্যে এই সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। গত বছরে ১৪ হাজার ৯শ জন অ্যাফেক্টেড এবং ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, এটা এখন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ হয়ে গেছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে এক সময়ে অতিমাত্রায় ডেঙ্গু রোগী ছিল এবং অনেক বেশি লোক আক্রান্ত, ক্ষতিগ্রস্ত ও মৃত্যুবরণ করেছে। এজন্য তাদের ভালো কিছু অভিজ্ঞতার কথা আলোচনায় আসে, এ কথাটা এজন্য রেফার করছি। এটা ফিলিপাইন থেকে মালয়েশিয়া, মালয়েশিয়া থেকে থাইল্যান্ড, থাইল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে আসতেই পারে যদি, তাহলে ঢাকা থেকে কুমিল্লা, নোয়াখালী, সিলেটে যাবে না- এই কথাটা আমি কী করে বলবো?
‘কীভাবে আসছে? হয়তো রোগী ওখানে অ্যাফেক্টেড হয়ে আসছে অথবা কিছু মশা যানবাহনের ভিতরে অর্থাৎ, ফ্লাইটের ভিতরে চলে আসছে। একটি-দু’টি যদি কোনোরকমে আসতে পারে তাহলে সে মশাটা যদি এক হাজারটা ডিম পেড়ে ফেলে তাহলে তো এক হাজারটা মশার উৎপত্তি হয়ে গেলো। আর এক হাজার মশা প্রত্যেকটাই জীবাণু বহন করছে। তাহলে এক হাজার মানুষকে যদি কামড়াতে পারে তাহলে এক হাজার জন অ্যাফেক্টেড হবে। অর্থাৎ, এটা গ্রামাটিক্যাল বিস্তার লাভ করতে পারে।
এডিস মশার বংশবিস্তার নিয়ে মন্ত্রী বলেন, এডিস মশা সাধারণত পরিষ্কার পানিতে জন্ম নেয়। সাধারণত আমাদের বাড়িঘরের ছাদ, ফুলের টব, ফ্রিজের পিছনে, এয়ার কন্ডিশনারের পানিতে ডিম পাড়ে। ওই জায়গাটা ধ্বংস করার জন্য তারা ফগারকে নেগলেট করে, রেয়ারলি করে।
সিটি করপোরেশন দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ- এ নিয়ে মন্ত্রী বলেন, হয়তো আমাদের সিটি করপোরেশনের ঘাটতি থাকতে পারে। তারা দায়িত্ব পালনের জন্য রেগুলোর আমাদের সঙ্গে কথা বলছে। ১৫৪ জন কর্মকর্তাকে প্রতি ওয়ার্ডে তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করছি।
এডিস মশা নিধন চ্যালেঞ্জ মনে করেন কিনা- প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, আমরা তো চ্যালেঞ্জ মনে করি। চ্যালেঞ্জ মনে করে আমরা সবাই মিলে কাজ করছি। মাঠে আমি নিজেও আছি। এই চ্যালেঞ্জ শুধু বাংলাদেশে নয়। সিঙ্গাপুরের মতো দেশ সেখানে ১৩ হাজার আক্রান্ত হয়েছে। এটা ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের রিপোর্ট।