বাজারে গাড়ি বিক্রিতে ভাটা; এর ওপর সরকারের অতিরিক্ত করের বোঝা। যে কারণে তাৎক্ষণিক ৩ হাজারের অধিক অস্থায়ী কর্মীকে ছাঁটাই করল ভারতীয় গাড়ি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান মারুতি সুজুকি।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) রাজধানী নয়া দিল্লিতে আয়োজিত বার্ষিক সাধারণ সভায় শেয়ার হোল্ডারদের বিষয়টি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান আর সি ভার্গব। একই সঙ্গে তাৎক্ষণিক ঘুরে দাঁড়াতে কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস (সিএনজি) চালিত গাড়ি তৈরিতে জোর দিচ্ছে মারুতি সুজুকি বলেও জানিয়েছেন তিনি।
চলতি বছরের জুলাই মাসে করা এক সমীক্ষার রিপোর্টে বলা হয়, টানা ৯ মাস যাবত গাড়ির বিক্রির হার কমতে কমতে বর্তমানে কার্যত তলানিতে এসে ঠেকেছে। বিভিন্ন লোভনীয় অফারের পাশাপাশি মূল্য কমিয়েও কোনো মতে বিক্রিতে গতি আনা যাচ্ছে না।
যদিও এর কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে গোটা বিশ্বেই এক অর্থনৈতিক মন্দাভাব চলছে। যে কারণে এবার তার প্রভাবই পড়তে শুরু করেছে ভারতেও। একই সঙ্গে কমতে শুরু করেছে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা। এমনকি বিলাসিতার চেয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দিকেই ঝুঁকছেন ক্রেতারা। এসবের পাশাপাশি নতুন করে যোগ হয়েছে গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলোর ওপর সরকারের 'সেফটি নর্মস' বা নিরাপত্তার বিধিনিষেধ এবং অতিরিক্ত করের বোঝা। তাছাড়া 'ওলা' ও 'উবারে'র মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর তৎপরতা তো আছেই।
এতদিন মধ্যবিত্তদের মধ্যে অনেকেই যারা এই গাড়ি ক্রয়ের পরিকল্পনা করছিলেন, এখন তাদের অনেকেই নিজে গাড়ি কিনে তা রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয়ভার বহনের চেয়ে; প্রয়োজনে 'ওলা', 'উবারে'র মতো অ্যাপভিত্তিক ক্যাবে চেপে যাতায়াত পছন্দ করছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, চলমান সংকটগুলো কাটিয়ে উঠতে এবং এর থেকে ঘুরে দাঁড়াতে উৎপাদন হ্রাস, ব্যয় সংকোচনের মতো পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে অধিকাংশ সংস্থা। যদিও খুব শিগগিরই বিষয়টির সমাধান না হলেও এ জন্য এক সঙ্গে এত সংখ্যক কর্মী ছাঁটাই কোনো মতেই কাম্য নয় বলে দাবি তাদের।