আমাজনে দাবানল: যে শর্তে বিদেশি সাহায্য নিতে রাজি ব্রাজিল

পৃথিবীর ‘ফুসফুসখ্যাত’ আমাজনের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আনতে বিদেশি সাহায্য নিতে রাজি হয়েছে ব্রাজিল। তবে এই সাহায্য নেওয়ার ক্ষেত্রে শর্ত দিয়েছে দেশটি। 

সহায়তার অর্থ কীভাবে ব্যয় হবে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ থাকলেই শুধুমাত্র আমাজন বনাঞ্চলের দাবানলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য পাওয়া বিদেশি ত্রাণ গ্রহণ করবে ব্রাজিল।

দেশটির প্রেসিডেন্সিয়াল মুখপাত্র রিগো বাহুসের বরাত দিয়ে সংবাদসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে গতকাল মঙ্গলবার এ কথা জানানো হয়। খবরে বলা হয়, দাবানলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তার জন্য ওই অর্থগুলো দরকার। ব্রাজিলের আমাজন অঞ্চলের রাজ্যগুলো গভর্নররা প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারোকে এমনটি জানানোর পর বাহুসের কাছ থেকে এই মন্তব্য আসে।

বেশ কিছুদিন ধরে বিশ্বের বৃহত্তম চিরহরিৎ বনাঞ্চল আমাজন রেকর্ড পরিমাণ দাবানলে জ্বলছে।

বাহুস বলেন, ‘ব্রাজিলের সরকার প্রেসিডেন্টের মাধ্যমে বিদেশি সংস্থা ও দেশগুলোর কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা নিতে রাজি। তবে এই অর্থ এই দেশে প্রবেশ করার পর পুরোপুরি ব্রাজিলের জনগণের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।’ 

আলাদাভাবে ব্রাসিলিয়ার (ব্রাজিলের রাজধানী) এক কূটনৈতিক সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, দাবানলের সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য ব্রিটেনের দেওয়া এক কোটি পাউন্ড গ্রহণ করেছে ব্রাজিল সরকার। তবে এই তথ্যের বিষয়ে মন্তব্য জানার জন্য বোলসোনারোর তথ্য দপ্তরের কাউকে তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে এই সংবাদ সংস্থা।

এর আগে আমাজনের চলমান ভয়ানক দাবানল নিয়ন্ত্রণে ব্রাজিল সরকারকে ২২ মিলিয়ন ডলার অর্থ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি৭। তবে সংগঠনটির এই আর্থিক সহায়তা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ব্রাজিল সরকার।

মঙ্গলবার ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তাকে যে ‘অপমান’ করছেন তা তুলে নিলেই কেবল জি-৭ গোষ্ঠীর দুই কোটি ডলার সাহায্যের প্রস্তাব গ্রহণ করার বিষয়টি বিবেচনা করবেন তিনি। তবে এ বিষয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট দপ্তর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

বোলসোনারো ও ম্যাক্রোঁ প্রকাশ্যেই গভীর ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন, সম্প্রতি তাদের মধ্যে বেশ কয়েকবার কথা চালাচালি হয়েছে। বোলসোনারো ম্যাক্রোঁর স্ত্রীকে নিয়ে উপহাস করেছেন এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ব্রাজিলের সার্বভৌমত্বের প্রতি অশ্রদ্ধা দেখিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। অপরদিকে ম্যাক্রোঁ বোলসোনারোকে মিথ্যাবাদী বলেছেন এবং ‘ব্রাজিলের নারীরা সম্ভবত তাকে নিয়ে লজ্জিত’ বলে মন্তব্য করেছেন।