ইরানের মহাকাশ গবেষণা কর্মসূচির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। মার্কিন প্রশাসন মঙ্গলবার ইরানের মহাকাশ গবেষণা কর্মসূচির ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বলে স্থানীয় এক সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে। এর আগে সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বেশ কয়েকজন ইরানি নেতার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলো ট্রাম্প প্রশাসন।
এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইরানের মহাকাশ গবেষণা কর্মসূচি এবং এর দুটি ইনস্টিটিউটের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। তার অভিযোগ, এই মহাকাশ গবেষণা কর্মসূচির নামে ইরান ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি পরিচালনা করছে। তাই তাদের মহাকাশ গবেষণা কর্মসূচির ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলো মার্কিন সরকার।
গত ২৯ আগস্ট ইরান যে রকেট উৎক্ষেপণের চেষ্টা করেছে এটি ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিরই অংশ বলেও দাবি করেছেন মাইক পম্পেও।
সাবেক সিআইএ প্রধান পম্পেও আরো দাবি করেন, ইরানের মহাকাশ কর্মসূচির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের কাছে এই হুঁশিয়ারি বার্তা যাওয়া উচিত যে, আজ যারা ইরানের মহাকাশ গবেষণা কর্মসূচিতে সহযোগিতা করছেন, তাদের সহযোগিতার কারণে একদিন পরমাণু অস্ত্র উৎক্ষেপণের ব্যবস্থা করবে তেহরান।
এর মাত্র দিন কয়েক আগেই তেহরানের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু তার সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, পরমাণু চুক্তিতে ফিরে আসার আগে ট্রাম্পের সঙ্গে কেনো আলোচনায় যাবে না তেহরান।
গত মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের সরাসরি প্রচারিত এক ভাষণে রুহানি বলেন, ‘আলোচনায় বসার আগে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে ইরানের বিরুদ্ধে আরোপিত সকল অবৈধ, অন্যায্য এবং ভুল নিষেধাজ্ঞা থেকে সরে আসতে হবে।’
এরপর গত বৃহস্পতিবার কুয়ালালামপুর এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট রুহানির কথার পুনরাবৃত্তি করেছেন মালয়েশিয়ায় সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ।
তিনি বলেন, ‘তারা (যুক্তরাষ্ট্র) যদি আলোচনার কক্ষে প্রবেশ করতে চায় তাহলে তাদেরকে আগে একটি টিকেট কিনতে হবে। আর সে টিকেটটি হচ্ছে তাদেরকে পরমাণু সমঝোতায় ফিরে আসতে হবে।’
জারিফ আরো বলেন, তার দেশ আলোচনার জন্য আলোচনা চায় না। বরং কোনো ফলাফল আসার সম্ভাবনা দেখা দিলেই কেবল আলোচনার টেবিলে বসবে ইরান।
প্রসঙ্গত, বারাক ওবামা মার্কিন প্রেসিডেন্ট থাকার সময় ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রসহ ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে পরমাণু সমঝোতা স্বাক্ষর করে ইরান। ওই সমঝোতার ভিত্তিতে ইরান তার পরমাণু কর্মসূচিতে সীমাবদ্ধতা আরোপ করে এবং তেহরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় পাশ্চাত্য দেশগুলো । কিন্তু গত বছর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার দেশকে এই সমঝোতা থেকে বের করে নিয়ে তেহরানের ওপর একতরফা কঠোর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেন। যার ফলে দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।