ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে নেয়ার সিদ্ধান্তে চিরবৈরী ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক অনেকটাই তলানিতে।
দুই দেশের সীমান্তের উত্তেজনা এখন দিল্লি ও ইসলামাবাদেও ছড়িয়েছে। ভারতীয় পার্লামেন্টে ৩৭০ ধার বিলোপের পর ভারতের সঙ্গে একের পর এক কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে চলেছে পাকিস্তান।
এদিকে বিষয়টি আন্তর্জাতিক নয়, ভারতের আভ্যন্তরীণ জানিয়ে পাকিস্তানকে এ বিষয়ে নাক না গলাতে সতর্ক করছে দিল্লি।
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর নিয়ে যখন পাকিস্তান নিজের অবস্থান জানাচ্ছে ঠিক সেই সময় চাঞ্চল্যকর এক মন্তব্য করে বিষয়টিকে আরও চরমে নিয়ে গেলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান বিপিন রাওয়াত।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় এই সেনাপ্রধান বলেন, পাক অধিকৃত কাশ্মীর দখলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে ভারত সরকার। আর সেজন্য ভারতীয় সেনাবাহিনী বিশেষভাবে প্রস্তুত রয়েছে। খবর এএনআইয়ের
পাক অধিকৃত কাশ্মীর দখলে জুম্মু-কাশ্মীরের স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্যই সরকারকে সাহায্য করবে বলে মনে করেন বিপিন রাওয়াত।
তিনি বলেন, সেখানে শান্তি ফেরাতে অবশ্যই সরকারকে একটা সুযোগ দেবেন তারা। ৩০ বছর তারা সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন।
উল্লেখ্য, চলমান কাশ্মীর সংকটের সময় ভারতীয় সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের রিপোর্টের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে শান্ত কাশ্মীরের কথা বলেছিলেন তিনি। তবে বিরোধীরা তার সেই দাবি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
এদিকে শুধ বিপিন রাওয়াতই নয়, ভারতীয় সেনাপ্রধানের সঙ্গে সুর মিলিয়ে একই বক্তব্য দিয়েছেন দেশটির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং।
তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এখন লক্ষ্য পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে দখল করা। এটা শুধু বিজেপির এজেন্ডা নয়, ১৯৯৫ সালে নরসিমা রাওয়ের সরকারে সর্বসম্মতিক্রমে এই প্রস্তাব গৃহীত হয়।
এদিকে কাশ্মীর বিষেয়ে যেকোনো মুহূর্তে ‘আকস্মিক যুদ্ধ’ শুরু হতে পারে বলে বুধবার সতর্ক করে দিয়েছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি।
জম্মু-কাশ্মীরের চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতি দেখতে এই অঞ্চল সফর করার জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান মিশেল বাচেলেতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত গত ৫ আগস্ট মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন-সংক্রান্ত সংবিধানের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে দেশটির ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকার।
সেদিন সংবিধান থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের তা বহাল রাখতে রাস্তায় নেমে আসে জুম্মু-কাশ্মীরের লাখো অধিবাসী।
বিক্ষোভ বানচাল করতে সেনা মোতায়েন বৃদ্ধি করে ভারত সরকার। ১৪৪ ধারা জারি করে। টেলিফোন, ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। গ্রেফতার করা হয় কাশ্মীরের উল্লেখযোগ্য নেতাদের। অচল করে দেয়া হয় গোটা কাশ্মীরকে। এমন পরিস্থিতিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সংঘর্ষে হাজার হাজার বেসামরিক কাশ্মীরির প্রাণহানি ঘটে।