জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে আলোচিত সুইডেনের ১৬ বছর বয়সি শিক্ষার্থী গ্রেটা থনবার্গ ২০১৯ সালের ‘বিকল্প নোবেল’ জিতলেন। তার সাথে আরো তিনজন এবার এই অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন।
বর্তমান সময়ের অতি জরুরি সমস্যার বাস্তবসম্মত উপায় বের করায় যারা অবদান রাখেন, তাদের সম্মানিত করতে ১৯৮০ সাল থেকে ‘রাইট লাইভলিহুড অ্যাওয়ার্ড’ দেয়া হচ্ছে। এটি ‘বিকল্প নোবেল’ নামেও পরিচিতি পেয়েছে।
জার্মান-সুইডিশ লেখক, অ্যাক্টিভিস্ট ও রাজনীতিবিদ কার্ল ভোলমার ইয়াকব ফন উক্সক্যুল এই অ্যাওয়ার্ড চালু করেন।
সাধারণত পরিবেশ রক্ষা, মানবাধিকার, টেকসই উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও শান্তি বিষয়ে অবদান রাখায় বিকল্প নোবেল দেয়া হয়ে থাকে। সুইডেনের স্টকহোমে যেদিন নোবেল দেয়া হয় তার আগের দিন সুইডিশ সংসদে বিকল্প নোবেলের অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সোচ্চার গ্রেটা থনবার্গ। সম্প্রতি বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে তিনি বলেছেন, ‘আমরা বিশাল মাত্রায় বিলুপ্তির পথে চলতে শুরু করেছি। আর আপনারা শুধু টাকাপয়সা আর অনন্তকাল ধরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির রূপকথার কাহিনি শুনিয়ে চলেছেন। কী সাহস আপনাদের!’
গ্রেটার পাশাপাশি আরো যে তিনজন এবার বিকল্প নোবেল পাচ্ছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন আমিনাতু হায়দার। পশ্চিম সাহারার স্বাধীনতার জন্য ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে লড়ছেন তিনি। আফ্রিকার পশ্চিম সাহারা এলাকায় বসবাসকারী সারাউই সম্প্রদায়ের মানুষ আমিনাতু হায়দার জেল খেটেছেন, মরক্কোর পুলিশের মার খেয়েছেন। কারণ, মরক্কো এই অঞ্চলকে নিজেদের বলে দাবি করে। শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করায় অনেকে হায়দারকে ‘সারাউই গান্ধী’ বলে ডাকেন। স্বাধীনতার দাবিতে গণভোট আয়োজনের দাবি জানিয়ে আসছেন তিনি।
গুয় জিয়েনমেই নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা চীনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আইনজীবী। চাকরিতে নারীদের পুরুষের সমান বেতন নিশ্চিত করা, যৌন হয়রানি, চাকরির নিয়োগপত্রে শর্ত হিসেবে গর্ভবতী না হওয়ার শর্ত আরোপের বিরোধিতা ইত্যাদি নিয়ে কাজ করেন জিয়েনমেই। এবারের বিকল্প নোবেল বিজয়ীদের মধ্যে আছেন এই নারীও।
ব্রাজিল ও ভেনেজুয়েলার অ্যামাজন রেনফরেস্টে প্রায় ৩৫ হাজার ইয়ানোমামি আদিবাসীর বাস৷ খনি মালিকসহ অন্যদের কাছ থেকে অনেক চাপের মুখে থাকেন তারা। ইয়ানোমামিদের অধিকার ও অ্যামাজন বন রক্ষায় কাজ করেন দাভি কোপেনাভা ও তার সংগঠন হুটুকারা ইয়ানোমামি অ্যাসোসিয়েশন। এবারের বিকল্প নোবেলের আরেক বিজয়ী দাভি কোপেনাভা ও তার সংগঠন।
১৯৯১ সালে জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও তার প্রতিষ্ঠিত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং ২০০৭ সালে গ্রামীণ শক্তি ‘রাইট লাইভলিহুড অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছে।