Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৬ শুক্রবার, মে ২০২৫ | ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে ছাত্রের সন্তানের চিকিৎসার টাকা দিলেন প্রাথমিকের শিক্ষক

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:০৪ PM
আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:০৪ PM

bdmorning Image Preview


এক প্রাথমিক শিক্ষক ছাত্রের সন্তানকে বাঁচাতে স্ত্রীর মঙ্গলসূত্র থেকে সোনায় বাঁধানো শাখা বিক্রি করে অর্থ যোগালেন। স্ত্রীর গয়না বেচেই ক্ষান্ত হয়নি সমাজসেবী ওই শিক্ষক।

বরং প্রতিনিয়ত পিকুর খোঁজ খবর নেয়া থেকে ছাত্রকে অভয় দিয়েছে টাকার জন্য চিন্তা না করার। এদিকে অর্থ যোগান দিতে অন্য ছাত্রদের নিয়ে পথে নেমেছেন শিক্ষক রানা বাবু।

ভারতের লালগোলা থানার যশইতলা গ্রামের ভাস্কর সাহার বছর দেড়েকের ছেলে পিকুর শরীরে ধরা পড়েছে বোন ম্যারো আপ্লেসিয়া। দুরারোগ্য এই চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তাই বলে তো সন্তানের চিকিৎসা না করে তাকে ফেলে রাখা যায় না।

প্রথমে বহরমপুর পরবর্তীকালে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসা করা হয় পিকুর। কিন্তু এসএসকেএমের চিকিৎসক মৈত্রী দেবী জানিয়ে দেন, ছোট্ট পিকুর চিকিৎসা করা সম্ভব নয় এসএসকেএমে।

ওই চিকিৎসকের পরামর্শেই পিকুকে নিয়ে যাওয়া হয় ভেলোরের সিএমসি হাসপাতালে। বর্তমানে পিকু সেখানেই চিকিৎসাধীন। সিএমসিতে দুরারোগ্য অটো ইমিউনি ডিজিজের চিকিৎসা চালাতে খরচ পড়বে ২০-২৫ লাখ টাকা। বিশাল ব্যয়ের কথা শুনে হতভম্ব হয়ে পড়েন মেধাবী ভাস্কর।

এত টাকা কোথায় পাবেন ভেবে যখন দিশাহারা হয়ে পড়েছিলেন পিকুর বাবা-মা, তখন তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন সামান্য প্রাথমিকের শিক্ষক রানা পাণ্ডে। এরই মধ্যে রানা তাঁর স্ত্রীর মঙ্গল সূত্র, নেকলেস, হীরের পেন্ডেন্ট, কানের ঝুমকো, সোনা বাঁধানো শাখা, পলা, নাকছাবি বিক্রি করে টাকা পাঠিয়েছেন ভেলোরে প্রাক্তন ছাত্র ভাস্করকে।

তাঁর দাবি, কোটি কোটি টাকা খরচ করে যদি মাটির প্রতিমাকে পুজো করা যায়, তাহলে একজন শিশুর চিকিৎসার জন্য সামান্য ২৫-৩০ লক্ষ টাকা কেন জোগাড় করা যাবে না। সেই মনোবলকে পুঁজি করে এখন এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে চাঁদা সংগ্রহে ঘুরছেন তিনি।

একজন মহিলার সবচেয়ে প্রিয় গয়না। আর হাতের শাখা বিবাহিত মহিলার সম্পদ। যা একজন শিশুর জন্য বিক্রি হয়ে গেলেও কোনও ক্ষোভ নেই রানাবাবুর স্ত্রী শ্রাবণী শীলের। বরং তাঁর বক্তব্য, এইভাবে যদি প্রতিটি মানুষ প্রতিবেশীর জন্য সহায় হয়ে দাঁড়ায় তাহলে সমাজ থেকে দুঃখ কষ্ট ঘোচানো কঠিন হবে না।

একজন শিক্ষকের অবদানের কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন ভাস্কর। ভেলোর থেকে ফোনে জানালেন, মাস্টারমশাই আমার ঈশ্বর। তাঁর আশীর্বাদেই আমার সন্তান সুস্থ হয়ে উঠবে। (সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন)

Bootstrap Image Preview