ভারতীয় সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ভূস্বর্গ খ্যাত জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করায় অঞ্চলটিতে ইতোমধ্যে এক থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যা নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে এবার চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সূত্রের বরাতে গণমাধ্যম ‘এনডিটিভি’ জানায়, আগামী সপ্তাহে অনানুষ্ঠানিক এই শীর্ষ সম্মেলনটি হওয়ার কথা রয়েছে। যা সম্ভবত ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য চেন্নাইয়ের নিকটবর্তী ঐতিহাসিক শহর মহাবলীপুরমে হতে চলেছে। যদিও এখন পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেই বৈঠকের তারিখ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। তবে এবার প্রতিবেশী রাষ্ট্র দুটির শীর্ষ এই নেতারা কাশ্মীর সংকটসহ দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা করতে পারেন।
এ দিকে গণমাধ্যমগুলোর দাবি, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের কয়েকদিন আগে আগামী ৮ অক্টোবর পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে চীনে আমন্ত্রণ জানাবে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। যেখানে তিনি কাশ্মীরে চলমান উত্তেজনা নিরসনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ইমরান খানের মতামত গ্রহণ করবেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাকিস্তানের দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি হতে যাচ্ছে ইমরান খানের তৃতীয় চীন সফর।
বিশ্লেষকদের মতে, চীনা প্রেসিডেন্ট এমন এক সময় ভারত সফরে যাচ্ছেন যখন কাশ্মীর ইস্যুতে আন্তর্জাতিকভাবে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বেইজিং। যদিও গত বছরের শেষ দিকে চীনের উহান শহরে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে প্রথম দফায় অনানুষ্ঠানিক শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট শি। মূলত এর পর থেকেই দেশ দুটির কর্তৃপক্ষ এই নেতাদের মধ্যে দ্বিতীয় বৈঠকটি আয়োজনের ব্যাপারে তৎপর হয়ে উঠে।
অপর দিকে বার্তা সংস্থা ‘এএনআই’ জানায়, গত আগস্টেই ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর শীর্ষ এই দুই নেতার মধ্যে দ্বিতীয় অনানুষ্ঠানিক শীর্ষ সম্মেলনটি আয়োজনের জন্য আচমকা চীন সফরে যান। মূলত এসবের প্রেক্ষিতে এবার শীর্ষ এই রাষ্ট্রনেতাদের মধ্যে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
এর আগে গত ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করেছিল ক্ষমতাসীন মোদী সরকার। যার প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে বিতর্কিত লাদাখ ও জম্মু ও কাশ্মীর সৃষ্টির প্রস্তাবেও সমর্থন জানানো হয়।
এসবের মধ্যেই চলমান কাশ্মীর ইস্যুতে পাক-ভারত মধ্যকার সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে একে একে ভারত সরকারের সঙ্গে বাণিজ্য, যোগাযোগসহ সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিয়েছে প্রতিবেশী পাকিস্তান।
যদিও এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে ভারত পাশে পেয়েছে রাশিয়াকে এবং পাক সরকারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশ ইরান। যদিও সেই তালিকায় পাকিস্তান প্রথমে চীনকে পাশে পেলেও ভারতীয় তৎপরতায় এখন তা অনেকটাই কমে গেছে।